বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:চিঠিপত্র (প্রথম খণ্ড ১৯৪২)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০
চিঠিপত্র

আমি তার জন্যে অনেক “অড্” আর জ্যাম নিয়ে যাব। কাল রাত্তিরে আমি খোকাকে স্বপ্ন দেখেছি— তাকে যেন আমি কোলে নিয়ে চট্‌কাচ্চি, বেশ লাগ্‌চে। সে কি এখন কথাবার্ত্তা বল্তে আরম্ভ করেছে—আমার ত মনে হচ্চে বেলা ওর বয়সে বিস্তর বোলচাল বের করেছিল। তোমাদের ওখেনে শীত নেই? আমাকে ত শীতে ভারি কাঁপিয়ে তুলেছে। কেবল কাল রাত্তিরে কোন্ একটা বদ্ধ জায়গায় নৌকা রেখেছিল, আর সমস্ত পর্দ্দা ফেলেছিল— তাই গরমে জেগে উঠেছিলুম—তার উপরে আবার কানেব কাছে একদল লোক সেই এক্‌টা দুটো রাত্তিরে গান জুড়ে দিলে “কত নিদ্রা দিবে আর উঠ উঠ প্রাণপ্রিয়ে!” প্রাণপ্রিয়ে যদি কাছাকাছির মধ্যে থাক্‌ত তা হলে বোধ হয় চেলা কাঠের বাড়ি পিটোত। মাঝিরা তাদের ধম্কে থামিয়ে দিলে, কিন্তু আমার মাথায় ক্রমাগতই ঐ লাইনটা ঘুরতে লাগ্‌ল “উঠ উঠ প্রাণপ্রিয়ে”— মাথার মধ্যে অসুখ কর্ত্তে লাগ্‌ল— শেষকালে পর্দ্দা উঠিয়ে জান্লা‌ খুলে শেষ রাত্তিরে এক্টু‌খানি ঘুমোতে পাই। তাই আজ কেবল ঘুম পাচ্চে।...তোমার ভাই কলকাতায় এসে কি রকম আছে। তার পড়াশুনোর কি কিছু ঠিক কর্‌চ? মাসকাবারী কমাসের বেরোলো? আমি হয় ত দিন পনেরো বাদে এখান থেকে যেতে পারব— এখনো বলতে পারিনে।

[ কালিগ্রাম
ডিসেম্বর, ১৮৯০]

শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর