পাতা:চিঠিপত্র (প্রথম খণ্ড ১৯৪২)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

·& R চিঠিপত্র করি বল, কলকাতার ভিড়ে আমার জীবনটা নিস্ফল হয়ে থাকে— সেই জন্যে মেজাজ বিগড়ে গিয়ে প্রত্যেক তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আক্ষেপ করতে থাকি— সকলকে মনের সঙ্গে ক্ষমা করে বিরোধ ত্যাগ করে অন্তঃকরণের শান্তি রক্ষা করে চলতে পারি নে। তা ছাড়া সেখানে রথীদের উপযুক্ত শিক্ষা কিছুতেই হয় না— সকলেই কি রকম উড় উড় করতে থাকে। কাজেই তোমাদের এই নিৰ্ব্বাসন দণ্ড গ্রহণ করতেই হবে । এর পরে যখন সামর্থ্য হবে তখন এর চেয়ে ভাল জায়গা বেছে নিতে হয় ত পারব, কিন্তু কোনকালেই আমি কলকাতায় নিজের সমস্ত শক্তিকে গোর দিয়ে থাকতে পারবন । সমস্ত আকাশ অন্ধকার করে নিবিড় মেঘ জমে এসে বৃষ্টি আরম্ভ হল— আমার নীচের ঘরের চারদিকের শাসি বন্ধ করে এই বর্ষণদৃশ্য উপভোগ করতে করতে তোমাকে চিঠি লিখচি । তোমাদের সেখানকার দোতলার ঘর থেকে এ রকম চমৎকার ব্যাপার দেখতে পেতে না । চারিদিকের সবুজ ক্ষেতের উপরে স্নিগ্ধ তিমিরাচ্ছন্ন নবীন বর্ষ ভারি সুন্দর লাগচে । বসে মেঘদূতের উপর একটা প্রবন্ধ লিখচি। প্রবন্ধের উপর আজকের এই নিবিড় বর্ষার দিনের বর্ষণমুখর ঘনান্ধকারটুকু যদি একে রাখতে পারতুম, যদি আমার শিলাইদহের সবুজ ক্ষেতের উপরকার এই শু্যামল আবির্ভাবটিকে পাঠকদের কাছে চিরকালের জিনিষ করে রাখতে পারতুম তাহলে কেমন হত ! আমার লেখায় ১ ইহার পর পাণ্ডুলিপির কিয়দংশ নষ্ট হইয়াছে।