রবীন্দ্রনাথের দীর্ঘজীবনের বিভিন্ন পর্বে লিখিত অগণিত চিঠিপত্র প্রাচুর্যের দিক দিয়া রবীন্দ্র-রচনার একটি প্রধান অংশ; কবির মানসলোকের অনেক মহলের রহস্যকুঞ্চিকা এই চিঠিপত্রের মধ্যেই গোপন আছে, এবং রবীন্দ্রজীবনীসৌধ গঠনের অনেক উপকরণ এই পত্রধারার মধ্যে ইতস্তত বিক্ষিপ্ত রহিয়াছে। এই চিঠিপত্রের যতটা অংশ এ-পর্যন্ত গ্রন্থাকারে সংবদ্ধ হইয়াছে, তাহার চেয়ে অনেক বেশি সাময়িক পত্রের পৃষ্ঠায় ও ব্যক্তিগত সংগ্রহে আবদ্ধ আছে।
বিশ্বভারতী গ্রন্থপ্রকাশবিভাগ এই সকল বিচ্ছিন্ন ও বিক্ষিপ্ত পত্র একত্র সংগ্রহ করিয়া চিঠিপত্র নামে পর্যায়ক্রমে গ্রন্থাকারে প্রকাশ করিতে ব্রতী হইয়াছেন। ইতিপূর্বে, কবির জীবিতকালে, ছিন্নপত্র, ভানুসিংহের পত্রাবলী এবং পথ ও পথের প্রান্তে নামে তিনখণ্ড পত্রসংগ্রহ তাঁহারই সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়; রচয়িতার চিরন্তন অধিকারবলে তিনি এই-সকল গ্রন্থে প্রকাশিত পত্রের বহু— স্থানে পরিবর্তন ও পরিবর্জন করিয়াছেন। চিঠিপত্র নামে এখন যে-সকল পত্রসংগ্রহ বিভিন্ন খণ্ডে প্রকাশিত হইবে তাহাতে একান্ত অন্তরঙ্গ বা অবান্তর কোনো অংশ ভিন্ন পরিবর্জনের দাযিত্ব আমরা গ্রহণ করিব না, এবং পাঠের কোনো পরিবর্তন করিব না; বর্জিত অংশ যথারীতি চিহ্নিত করিয়া দেওয়া হইবে। তাঁহার মূল চিঠির বানান ও ক্ষুদ্রতম চিহ্নাদি পর্যন্ত অবিকল রাখিবার চেষ্টা করা হইয়াছে। ব্যক্তিবিশেষকে লেখা চিঠি যথেষ্টসংখ্যক থাকিলে, পত্রে উল্লিখিত বা অনুমিত কালানুক্রমে সেগুলি একখণ্ডে প্রকাশিত হইবে।
চিঠিপত্রের প্রথম খণ্ডে, সহধর্মিণী মৃণালিনী দেবীকে লিখিত কবির ছত্রিশ খানি চিঠি মুদ্রিত হইল। পত্নীর মৃত্যুর (৭ অগ্রহায়ণ, ১৩০৯) পর এই কয়খানি চিঠি কবির লক্ষ্যগোচর হইয়াছিল, ও এতদিন সেগুলি