পাতা:চিঠিপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছাপা হয়ে বেরোয়, সেই অনুসারে নিলেম বসে, ভীড় জমে। তখন মানুষের ভাগ্য অনুসারে মাল্যচন্দন, পূজা-অৰ্চনা সবই জুটুতে পারে ; কিন্তু এখন পথযাত্রীর রিক্তপ্রায় হাতের উপর বন্ধুর যে করম্পর্শ নির্জন প্রভাতে দৈবক্রমে এসে পড়ে, তার মত মূল্যবান আর কিছুই পাওয়া यग्नि नीं । তখন জগদীশ যে চিঠিগুলি আমাকে লিখেছিলেন তার মধ্যে আমাদের প্রথম বন্ধুত্বের স্বত চিহ্নিত পরিচয় অঙ্কিত হয়ে আছে। সাধারণের কাছে ব্যক্তিগতভাবে তার যথোচিত মূল্য না থাকতে পারে, কিন্তু মানবমনের যে ইতিহাসে কোনো কৃত্রিমতা নেই, যা সহজ প্ৰবৰ্ত্তনায় দিনে দিনে আপনাকে উদঘাটন করেছে, মানুষের মনের কাছে তার আদর আছেই। তা ছাড়া, যার চিঠি তিনি ব্যক্তিগত জীবনের কৃষ্ণপক্ষ পেরিয়ে গেছেন, গোপনতার অন্ধ রাত্রি তাকে প্রচ্ছন্ন করে নেই, তিনি আজ পৃথিবীর সামনে প্রকাশিত। সেই কারণে র্তার চিঠির মধ্যে যা তুচ্ছ তাও তার সমগ্র জীবন-ইতিবৃত্তের অঙ্গরূপে গৌরব লাভ করবার যোগ্য । এর মধ্যে আমার ও উৎসাহের কথা আছে। প্রথম বন্ধুত্বের স্মৃতি যদিচ মনে থাকে, কিন্তু তার ছবি সৰ্ব্বাংশে সুস্পষ্ট হয়ে থাকে না। এই চিঠিগুলির মধ্যে সেই মন্ত্র ছড়ানো আছে যাতে করে সেই ছবি আবার আজ মনে জেগে উঠচে । সেই তার ধৰ্ম্মতলার বাসা থেকে আরম্ভ করে আমাদের নির্জন পদ্মা তীর পর্য্যস্ত বিস্তৃত বন্ধুলীলার ছবি । ছেলেবেলা থেকে আমি নিঃসঙ্গ, সমাজের বাইরে পারিবারিক অবরোধের কোণে কোণে আমার দিন কেটেছে। আমার জীবনে প্রথম বন্ধুত্ব জগদীশের সঙ্গে । অামার চিরা ভ্যস্ত কোণ থেকে তিনি আমাকে টেনে বের করেছিলেন যেমন ক’রে শরতের শিশিরস্নিগ্ধ স্বর্ধ্যোদয়ের মহিমা છે અ ર