পাতা:চিঠিপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড ১৯৯৩)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তখন কোথায় তুমি কোথায় আমি ! সম্পূর্ণতা কেবল মরীচিকার মত আগে আগে চলে তাহার পথের আর শেষ নাই। এমন করিয়া কে আমাদিগকে কেবলি টানিয়া চলিয়াছে ? একএকবার ইচ্ছা করে বিদ্রোহ করি— সব কাজকৰ্ম্ম ফেলিয়া মুখামুখি করিয়া বসি— হৃদয়টাকে পূর্ণ করিয়া তুলি। কিন্তু পথের আহবান যখন আসে তখন লক্ষ্মীছাড়া আর বসিয়া থাকিতে পারে না— আবার দৌড় আবার দৌড় ! একটা পাকের মধ্যে পড়িয়া গেছি। সমস্ত বিশ্বজগৎটা একটা পাক— কেবলি ঘুরিতেছে— ঘোরাই যেন তাহার পরিণাম— মানবলোকও একটা পাক—কেবলি ঘুরিয়া চলিতেছে তাহার পরিণাম কোথায় ? এই জন্তই ভগবান বুদ্ধ ব্যাকুল হইয়। এই পাক হইতে কোনমতে বাহির হইবার জন্য এত চেষ্টা করিয়াছিলেন । সমস্ত মানুষ বাহির না হইলে একজনের বাহির হইবার জো নাই । জন্মজন্মান্তরের মধ্য দিয়া এই মানুষয়ূর্ণীতে ঘুরিয়া মরিতে হয়। তোমাদের বিজ্ঞানের মতে আকাশের এক জায়গায় পাক খাইয়া জগৎ অগণ্য গ্ৰহতারায় ঝলকিয় উঠিয়াছে—- কোন কোন পণ্ডিত এইরূপ বলে না ? এই পাকের মধ্যে অগণ্য চক্ৰ— নক্ষত্রচক্র, সৌরচক্র, গ্রহচক্র, জীবচক্র— এই পাকের বাহিরেই স্থির শাস্তি । প্রাণটা সেইখানকার জন্য দুই হাত বাড়ায়, কিন্তু ভীষণ জগতের টান তাহাকে আপনার অনন্ত ঘূর্ণায় বার বার টানিয়া লয়। প্রেমে যেন এই পাকের মধ্যেও একটুখানি স্থিতি ও পরিপূর্ণতার 8b*