পাতা:চিঠিপত্র (সপ্তম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তারা কেউ বা তাকে “শান্তি” বলে চায়, কেউবা তাকে “সাম্বনা” বলে চায়, কেউবা তাকে “শক্তি” বলে চায়, কেউবা র্তাকে অন্যের অনুকরণে চায় কেউবা এই বলে চায় যে যখন ঋষিতপস্বীরা তাকে চেয়েছে তখন নিশ্চয় তাকে পাওয়াটা খুব গৌরবের । আমরা ব্যামোর সময় ওষুধ চাই, অভাবের সময় টাকা চাই ঈশ্বরকে তেমন করেও চাই– সেটা যে একেবারে অন্যায় অসঙ্গত আমি তা বলতে পারি নে— কিন্তু সেইরকম চাওয়া নিতান্তই গৌণ চাওয়া— মুখ্য চাওয়া নয়। যে চাওয়া আধ্যাত্মিক চাওয়া সে তাকে পেতে চাওয়া নয়— র্তার সঙ্গে মিলতে চাওয়া । পৃথিবীতে কিছুর সঙ্গে আমরা মিলতে পারিনে এইটেই আমাদের সকলের চেয়ে বেদনা। আংশিক ভাবে একটুমাত্র মিলি বাকি সব জায়গায় বাধে । তার প্রধান কারণই হচ্চে সকলেই নিজের সীমা দিয়ে আমাদের বাধা দেয়— তার সঙ্গে আপনাকে সবদিক দিয়ে মিলিয়ে দেওয়া অসম্ভব । স্বামীর স্বামিত্ব, বন্ধুর বন্ধুত্ব, পিতার পিতৃত্ব, পুত্রের পুত্রত্ব সৰ্ব্বত্রই অল্প কিছু দূর গিয়ে ঠেকে যায়— তার মধ্যে আত্মা আপনাকে পরিপূর্ণরূপে খুজে পায় না। যিনি জগৎ জুড়ে আমার পিতামাতা স্বামীবন্ধু সব হয়ে আছেন তার মধ্যেই দেহে মনে আত্মায় কোথাও আমাদের আর ঠেকেন ।