প্রিয়***
বন্ধুদেশে গ্রন্থকারের অভাব থাকুক আর না থাকুক, আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে সমালোচকের অভাব নাই। বঙ্গদর্শনের ভূতপূর্ব্বে ক্ষণ জন্মা সম্পাদক হইতে ঐ “আড্ডা বিহারিণী পত্রিকার” সম্পাদক পর্যন্ত সকলই সমালোচক। অতএব তুমি যদি তোমার কবিতাগুলি প্রকাশ করিবার সঙ্কল্প করিয়া থাক তবে প্রকাশের পূর্ব্বে আমার কি অন্য কাহারো মত জানিবার কিছুমাত্র প্রয়োজন নাই। বিশেষতঃ তোমার কবিতাগুলিতে “যুক্তাক্ষর ট ঠ ড ঢ ণ র য ইত্যাদি অক্ষরের অধিক প্রণয়” আছে কি না আমার স্মরণ নাই। সে দিন মাত্র একজন সমালোচক অনুগ্রহ করিয়া আমাকে বুঝাইয়া দিয়াছেন যে “সুকবিজনোচিত রচনাতে এরূপ প্রণয় অমার্জনীয়।” এমত অবস্থায় তোমার কবিতা সম্বন্ধে মত প্রকাশ করিয়া কেন আমি তীব্র কটাক্ষ ভাজন হইতে যাইব?
তবে একটা কথা বোধ হয় বলিতে পারি। তোমার যে সকল কবিতা আমি তোমার মুখে শুনিয়াছি—যুক্তাক্ষর থাকিলে ও তাহাদের কবিত্বে এবং লালিত্বে আমি মোহিত হইয়াছিলাম। আমার বোধ হইয়াছিল যেন কবিতা স্রোতের ন্যায় বহিয়া গিয়াছে, কোন স্থানে কষ্ট কল্পনার চিহ্ন নাই, বরং স্মরণ হয় স্থানে স্থানে কবিত্ব শক্তির সুন্দর বিকাশ দেখিয়াছিলাম। বড় সুখের হইত যদি তোমার সুললিত আবৃত্তি শক্তি এ কবিতার সঙ্গে প্রকাশ করিতে পারিতে।