পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

হংকং।
৯১

চীন ফিরিওয়ালার দেশ। লোকেরা নিজ নিজ কাজ নিয়েই ব্যস্ত,—আহারাদি বা অন্য আবশ্যকীয়, কাজের বিষয় তাহাদিগকে কিছুই ভাবতে হয় না। ফিরিওয়ালারাই সব যোগায়; ভাতও ফিরি ক’রে বিক্রি হয়। চীনে স্ত্রীলোক জামা-কাপড় রীপু ক’রে বেড়ায় ও অন্য ফিরিওয়ালা আফিম, চা ও চুরুট বেচে যায়।

 এ অঞ্চলের অধিকাংশ লোকই অল্প-বিস্তর ইংরাজী জানে। ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংরাজী, খোঁনা স্বরে কহিয়া ইহারা নেহাৎ আবশ্যকীয় মনের ভাবগুলি প্রকাশ করে। পৃথিবীর পূর্ব্ব-অঞ্চলের বাণিজ্যস্থান মাত্রেরই সাধারণ ভাষা ইংরাজী। শুনেছি নাকি ভূমধ্য সাগরের আশে পাশে সকল স্থানেই ফরাসী ভাষাই চলতি। দক্ষিণ আমেরিকায় সেইরূপ স্পেনিস ভাষাই প্রচলিত। এরূপ ভাঙ্গা ভাঙ্গা খোঁনা ইংরাজীর নাম “পিজন ইংলিস্"। তার না আছে ব্যাকরণের ঠিক, না আছে উচ্চারণের ঠিক,—কোনরূপে মনের ভাব প্রকাশ করা মাত্র। ভাষাশাস্ত্রে সুপণ্ডিত মরিস্ সাহেব তাঁহার “ভাষা-বিজ্ঞান' নামক পুস্তকে বলিয়াছেন যে, ভবিষ্যতে এই পিজন ইংলিসই জগতের ভাষা হ’য়ে দাঁড়াবে। একথাও অসম্ভব বোধ হয় না। এ অঞ্চলের যেখানে গেলাম, তথাকার অধিবাসীরা, -অজ্ঞই হোক আর বিজ্ঞই হোক, অল্প-বিস্তর পিজন ইংলিস জানে; রাজ্যবিস্তার ও বাণিজ্যবিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে এই ভাষাই পৃথিবীর ভাষা হইবে। ফরাসী ভাষার এতদিন যেরূপ প্রাধান্য ছিল, কালক্রমে ইংরাজীই তাহা অধিকার করিবে।

 পূর্ব্বোক্ত নৌকার লোকেরাও এইরূপ ইংরাজী ভাষার দর-দস্তুর করে। পিজন ইংলিশের দু’একটা উদাহরণ দিলে পাঠক বেশ বুঝতে পারবেন। একদিন নৌকা-ভাড়া দেবার জন্য আমার কাছে কিছু ভাঙ্গান ছিল না। সুতরাং নৌ-সিমন্তিনীকে জিজ্ঞাসা করিলাম,—