পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০০
চীন ভ্রমণ।

আঁচায় না ও মলত্যাগের পর জলশৌচ করে না, কাগজ ব্যবহার করে। জল ব্যবহারে বড়ই নারাজ। এক পেয়ালা রাঁধা ভাত ও চার রকম তারকারীর মূল্য ২ সেণ্ট, অর্থাৎ দু’পয়সা মাত্র। এইরূপ দুই পেয়ালামাত্র ভাত পাইলেই তাহার এক বেলার খোরাক হয়। তারা তিন বেলা থায়,—সকাল ৮টা দুপুর ১টা ও সন্ধ্যা ৬টা। খাবার পরিমাণ ধরিলে, আমরা দুইবারে যত খাই তদপেক্ষা তাহারা অনেক কম খায়।

 চীনেম্যানদের হজমশক্তি এত সতেজ থাকে। তার অনেক কারণ আছে। কাঠি দিয়া অল্প অল্প ভাত উঠাইয়া খায় বলিয়া আস্তে আস্তে বেশ চিবাইয়া খাওয়া হয়। খেতে বসে তারা কখনও জল খায় না। ঠাণ্ডা সরবৎ প্রভৃতি জিনিষ কখনও খায় না। মাঝে মাঝে ছোট পেয়ালায় ক'রে দুধ চিনি বিহীন সবজে চা সিদ্ধ খায়; একত্রে বসিয়া খাইতে খাইতে নানা গল্প করে। পরিমাণে অল্প খায়। আস্তে আস্তে অনেক ক্ষণ ধরিয়া খায়। যথেষ্ট কায়িক পরিশ্রম করে। ধনী হইলেও বসিয়া শুইয়া সময় কাটায় না। অন্য কিছু করিবার না থাকিলে জুয়া খেলে। লেখা পড়ার সহিত বড় একটি সম্বন্ধ নাই। সদা সন্তুষ্ট চিত্তে মনের আনন্দ লইয়াই আছে। সকল শ্রান্তি, সকল ব্যথা আফিম সেবনে জুড়ায়। এই সকল নানা কারণে যা খায় তাই সুহজম হয়, দেহও খুব সুস্থ ও সবল থাকে। আজ কাল যে আমাদের দেশে দেশশুদ্ধ লোক ডিসপেপসিযায়(অগ্নিমান্দ্য রোগে) ভুগচে, তার একটি প্রধান কারণ তাড়াতাড়ি খাওয়া। পাঁচ পাঁচটি আঙ্গুলোর সাহায্যে, আফিস স্কুল যাইবার ব্যস্ততায়, ভালরূপে না চিবাইয়া তাড়াতাড়ি আহার সেরে ফেলা অনুচিত। আমাদের মধ্যে খাওয়া-দাওয়া একটি অবহেলার কাজ হইয়া দাঁড়াইয়াছে। চীনেম্যানদের কিন্তু খাওয়াটাই সর্ব্বাপেক্ষা প্রধান কাজ।

 তবে তারা খায় যা তা। সে সব থাদ্যের কথা ভাবিলেও বমি