পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/১১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৮
চীন ভ্রমণ।

বলিলেন, -“বেশ করেছেন শুভাগমন করেছেন।” “(Quite welcome!)” জাহাজে ছাড়া শিক্ষিত জাপানীর সঙ্গে কথোপকথন এই আমার প্রথম। আমার প্রত্যেক প্রশ্নের তিনি সযত্নে উত্তর দিতে লাগিলেন। বর্ম্মা ও চীনদেশে অনেক ইংরাজী-জানা লোকের সঙ্গে কথা কহিয়াছি; এমন সরল সুস্পষ্ট উত্তর কোথাও শুনি নাই। ঠিক যেন আমার মনের কথা বুঝিয়া লন, এবং তাহার যথাযথ উত্তর দেন। সৌন্দর্য্যজ্ঞান আছে বলিঙ্গা তাঁহার সেই উত্তরগুলি বড়ই হৃদয়গ্রাহী বলিয়া মনে হইল।

 যে দিকটি প্রথমে দেখিলাম, সে দিকটিতে সবই চীন ও জাপানী চিত্র। জাপান দেশের প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলীর, ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর ও জাপানী গাৰ্হস্থ্যজীবনের আলেখ্য। সে সব চিত্র দেখিলে অনেকাংশে জাপান দেখার কাজ হয়। আমার এই কয়খনি ছবি দেখিয়া ও চিত্রকারের মুখে তাহার বৃত্তান্ত শুনিয়া কত যে শিক্ষা হইল, তাহা বলিবার নয়। কাঙ্গালকে শাকের ক্ষেত দেখাইলে যেমন তাহার লোভ বাড়িয়া যায়, আমারও সেইরূপ হইল; যে কয় দিন, হংকংএ ছিলাম, শেষ দিন ছাড়া প্রত্যহই সেই চিত্রশালায় যাইতাম। প্রত্যহই তিনি চিত্র দেখাইতেন, এবং কতকক্ষণ ধরিয়া বুঝাইয়া দিতেন। আমি সাহেব নই হিন্দু, এ কথা শুনিয়া তাঁহার আত্মীয়তা আরও বাড়িয়া গেল। শিক্ষিত জাপানীরা ভারতবাসীকে এমনই স্নেহ ও সম্মান করেন। ভারতবর্ষ তাঁহারা অতি পবিত্র স্থান বলিয়া বিবেচনা করেন।

 দরজার সম্মুখের ছবিখানিতে দেখিলাম, একটি বৌদ্ধমন্দিরের প্রাঙ্গণে অনেকগুলি হরিণশিশু নির্ভয়ে য়ে বিচরণ করিতেছে। শুনিলাম, নিয়ামিষভোজী প্রাণিহিংসাবিরহিত জাপান দেশে এরূপ যথার্থই দেখা যায়। কল্পনা-লিখিত নহে। সেইখানেই আবার ঘুঘুর মত একরকম পাখী মাটী থেকে শস্য খুঁটিয়া খাইতেছে! একটি জাপানী রমণী পূণ্য-