পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জাপানী চিত্রকরের চিত্রশালা।
১১১

 এই সকল অশান্তিপূর্ণ বীভৎসরসাত্মক যুদ্ধ-বিগ্রহের ছবিগুলির পাশেই একটি স্বর্গীয় দুতের ছবি। জ্যোৎস্নার আধ-আলো আধ-ছায়ার একখানি জ্যোতির্ম্ময় মেঘের মত শ‍ূন্যে থাকিয়া সুষুপ্তা পৃথিবীর উপর বিশ্বের শুভকামনাপূর্ণ শান্তিসঙ্গীতধারা বর্ষণ করিতেছেন। যুদ্ধের ছবির পাশে সে ছবিখানি দেখিয়া মনে হইতেছিল যেন তিনি যুদ্ধেরই শান্তি গান গাহিতেছিলেন,—

“নির্ব্বাণ হোক বৈরানল, বীরকুলের হোক কুশল;
স্থির থাকুন ভূমণ্ডল, সুখে থাকুক প্রজাগণ”

 সেখান হইতে চোখ ফিরাইয়া তাহার পার্শ্বে দেখিলাম, জাপান, রাজ মিকাডো ও তাঁহার মহিষীর ইউরোপীয় পোষাক পরা প্রতিকৃতি। সুন্দরী মিকাডো-মহিবীকে এই পোষাকে বড়ই কদর্য্য দেখাইতেছে। ঠিক যেন আয়ার মত। শুনিলাম, ইনি এইরূপ বিদেশীয় সাজ-সজ্জা পরিতে বড়ই ভালবাসেন। দেশের বিস্তর লোকেরই এখন সকল বিষয়ে ইউরোপের অনুকরণে অনুরাগ। সেই জাপানী চিত্রকরের মুখে এই সম্বন্ধে আর একটি অতি বিস্ময়কর সংবাদ শুনিলাম যে, এইরূপ সজ্জায় স্ত্রী স্বামীর অগ্রবর্ত্তিনী হইয়া চলিতে পান, কিন্তু দেশীয় পোশাক পরা থাকিলে সামাজিক নিমন্ত্রণে স্বামীর পিছনে পিছনে চলিতে হয়।

 এই ছবির পাশেই দেখিলাম, একটি বয়স্ক শিশু তার মাকে সেখানে আসিতে দেখিয়া খেলার সঙ্গীদের ক্ষণকালের জন্য ছাড়িয়া ছুটিয়া মার স্তন্যপান করিতে আসিতেছে। মার মুখে সন্তানবাৎসল্যের ভাব ও ছেলের মুখে মাতৃস্নেহের অভিব্যক্তি সুন্দররূপে চিত্রিত হইয়াছে। চারি চোখে এক হইতেই দু’জনেরই মুখে হাসি। একজন কোলে লইতে ও অপর জন কোলে উঠিতে সাগ্রহে হাত বাড়াইয়াছে। অত বড় ছেলে এখনও মাই খায় কেন, এ কথা আশ্চর্য্য হইয়া জিজ্ঞাসা করাতে শুনিলাম যে, জাপানে ছেলেরা অনেকে ৪৷৫ বৎসর অবধি মাই