বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১২
চীন ভ্রমণ।

খ।য়। গরু বা অন্য পশুর দুগ্ধ ব্যবহার করিবার প্রথা নাই, তাই এরূপ করিতে হয়। এরূপ অপর কোথাও দেখিও নাই, শুনিও নাই।

 তাহার নিকটেই একটি জাপানী বিবাহের ছবি। বর-বধূ বিবাহ আসরে পাশাপাশি বসিয়া মাঙ্গলিক মদ্যপান করিতেছেন। শুনিলাম, চীনদেশের মত ক’নেকে বরের বাড়ী আনাইয়া। বিবাহ দেওয়া হয়। আমাদের দেশের বা বর্ম্মা দেশের বা মালয়ের মত বরকে কনের বাড়ী যাইতে হয়। চিত্রকর আমাকে কতকটা বিস্মিত দেখিয়া জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনার দেশে কি হয়?” আমার উত্তর শুনিয়া বলিলেন, “কে সম্পর্কে বড়?—কি হওয়া উচিত?” আমি উভয়েরই সম্মানরক্ষা করিয়া বলিলাম,— “দুজনেরই চার্চ্চে গিয়া বিবাহিত হওয়া উচিত। তাহাতে কাহারও মর্য্যাদার হানি হয় না। বুঝা গেল, হাজার স্ত্রী স্বাধীনতা থাকিলেও সকল দেশেই স্ত্রীজাতির একটু অবজ্ঞার ভাব লোকের অন্তরে থাকে; সহজে য্য় না।

 তার পাশেই একটি (numery) মঠের ছবি! তার তলায় লেখা রয়েছে, (The Foundling) রাত্রি যোগে কে একটি নবপ্রসুত শিশু মঠের “অনাথ আশ্রম”, দ্বারে ফেলে রেখে গেছে। ছেলেটিকে দেখলেই মনে হয় যেন, অল্পক্ষণ হইল তুমিষ্ট হইয়াছে গর্ভাবস্থার ক্লেদ এখনও তার গায়ে লেগে আছে,—এত তাড়াতাড়ি এক সন্তর্পণ। অতি প্রত্যুষে এক জন সন্নাসিনী শিশুর কান্না শুনে এসে দেখে যতনে শিশুটিকে তুলে নিচ্চেন। সে ভুলে লওয়ার ভাবই বা কি সুন্দর— যেন আপনারই হারাণধনকে কোলে নিচ্চেন। সুস্থকায় শিশুটি পদ্ম ফুলের মত দেখতে। লোক লজ্জায় ফেলে গেছে বটে কিন্তু মাতৃ স্নেহ ফুরায় না। তাই শীত নিবারণের জন্য শিশুটির সর্ব্বাঙ্গে কাপড় দিয়ে ঢাকা। জানেন যে সে ধর্ম-মন্দিরের অধিবাসিনীদের করূণার চখে পড়লে তাঁর শিশুটির কত মা জুটিবে।