পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জাপানী চিত্রকরের চিত্রশালা
১১৫

দুঃস্বপ্নের অশান্তিরেখা মুখে স্পষ্ট দেখা যাইতেছে। অ্যাডাম অতি আদরে গা ঠেলিয়া নানারূপ প্রিয় সম্বোধনে ইভ‍্কে বলিতেছেন,

“—-Awake,
My fairest, my espoused, my latest found,
Heaven's lust best gift, my ever new delight,
Awake, the morning shines."

 অর্থাৎ—“ধর্ম্মপত্নী উঠ, তুমিই আমার চোখে সকল সৌন্দর্য্যের আধার, সবে মাত্র তোমায় পেয়েছি—স্বর্গ হতে সর্ব্বের শেষ, সর্ব্ব শ্রেষ্ঠ দান তুমি, যখনই দেখি মন আনন্দে ভরে যায়। —গা তোল সকাল গেছে যে।”

 অপর প্রাচীরে আর কতকগুলি অতি সুন্দর ছবি ছিল। তার মধ্যে প্রথমেই “হেলেনের জন্ম” (“Birth of Hellen”)। ছবিখানি কিছু অশ্লীল। তবে ভারতের চক্ষে ব্রহ্মাণ্ডের সকল নিয়ম, সকল সৌন্দর্য্যই পবিত্রতা মাধান। তাই বোধ হয়, এবং রুচিপুলিস পত্তি করে নাই। নদীর ধারে উত্তেজিত হংসরাজ গ্রীবা বাড়াইয়া সাগ্রহে চঞ্চুপুটে আবেশ-অবসন্ন “লীডা"র অধরোষ্ঠ ধরিয়াছেন। তাহার ডানা দুটি মেলান ও পক্ষিশরীরের পশুরাজি কণ্টকিত।

 তাহার পার্শ্বেই (“Water Baby”) “জলের শিশু”। জলদেবীর প্রথম শিশুটি ভূমিষ্ট হইয়াই কাঁদিতেছে। মা যেন অনভ্যস্ত আড়ষ্টর মত, ছেলে নিতে জানেন না। তার ঘাড় ঝুঁকে পড়েছে —চুলগুলি সব ভিজে গিয়েছে। ছোট ছেলের ছঃখকষ্টহীন কান্নায় রেখাগুলি শিশুর মুখে সুস্পষ্ট বিদ্যমান। আর তাঁহার নিজের শরীর গোলমালে প্রায় বিবস্ত্র। ছেলেটিকে সম্মুখে রেখে বিমূঢ়ের মত এক পা জলে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। বিস্ময় ও সন্তান-স্নেহের নূতন আবির্ভাবে অপূর্ব প্রতিমাখান মুখের ভাব। ছেলে হওয়া যে কি, এতদিন যেন তা জানতেন না।