পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/১৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হংকং
১২৫

চির কৃতার্থ হ’য়ে তার চরণতলে সৌন্দর্যোর ডালি ধ’রেছে। হৃদয় তো দেখান যায় না। মনের ভাব আমনি করেই ফুটে বেরোয়।

 যতদিন হংকং সহরে ছিলাম, সেখানে প্রায়ই বেড়াতে যেতাম। কোন কোন দিন সেখান হইতে ফিরিবার সময় পদব্রজে বটানিক্যাল গার্ডেন বেড়াইয়া আসিতাম। উহা ঐ পাহাড়ের মাধ্যদেশে অবস্থিত বলিয়া আসিবার পথেই পড়ে। সেখানে কত রকমের ছোট বড় গাছ ও ফুল দেখা যায়। তার মধ্যে অনেকগুলি আমাদের এদেশে দেখিতে পাওয়া যায় না।

 জাপান দেশের “Dwarf plant” (বেঁটে গাছ) নামক তাল ও নারিকেল জাতীয় ছোট গাছ গুলি এখানে সতেজে জন্মে। “বেম্বুসা” নামক অতি ছোট বাঁশের ঝোঁপগুলি ঠিক ঘাসের ঝোপের মত দেখিতে। সেখানকার ঘাস গুলি ঠিক আমাদের ঘাসেরই মত। তাতেও ফড়িঙ্ লাফায়। পদ্ম জাতীয় এক রকম গাছ ঝরণার জলস্রোতে জন্মে-কিন্তু তার ফুল গুলি সুস্থ ও সতেজ হইলেও ভাল করিয়া ফুটে না। তারাও যেন চীন জাতীয় স্ত্রীলোকের সরল বিনয়-নম্র লজ্জাশীল স্বভাব পাইয়াছে।

 সেই পাহাড়েরই এক স্থানে একটি সুন্দর দৃশ্য দেখিলাম। স্থানটি বড় বড় গাছের ঘন পাতার আবরণে ঢাকা একটি কুঞ্জবনের মত। তার ভিতর দিয়া পথ। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন-পাতরে বাঁধান পথের ধারেই পাতরে বাঁধান পয়োনালি দিয়া একটি ছোট ঝরণার জুল ঝর্ ঝর্ রবে প্রবাহিত হইতেছে। চারিদিকের উচ্চ পাঞ্ছাড়ে প্রতিধ্বনিত হ’য়ে সে স্বরটি অতি শ্রুতিমধুর হইয়াছে। আর সেই সঙ্গে বৃক্ষশাখায পাখীর গান। পার্থীরা ঝাঁকে ঝাঁকে সেই সব গাছের ডালে ব'সে গান করে, ক্লান্ত হ’লেই সেই পাতারের উপরকার নির্ম্মল জলস্রোতে ঠোঁট ডুবিয়ে জল পান করে। তার মধ্যে অনেকগুলি পাখী ঠিক আমাদের দেশের