বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চীন ভ্রমণ।

কখন অন্য জাহাজের সহিত দেখা হয়; তখন শত শত লোক উৎসুক চিত্তে, সাগ্রহ দৃষ্টিতে সেই দিকে চাহিয়া থাকে,—যেন কি এক অদ্ভুত নূতন জিনিষ। এই সময় ডেকে বসিয়াই অধিকাংশ সময় কাটে! বসিয়া বসিয়া বিরক্তি ধরিয়া যায়। একটু চলিতে ইচ্ছা হয়। তখন কেবল মাত্র একটু এদিক ওদিক পা-চালি করা চলে। দোলনা আছে দুলিতে পার, রক্ত সঞ্চালন একটু সতেজ হইবে। পুস্তকাগার আছে তাহা হইতেই পুস্ত্ক লইয়া অধিক সময় কাটান যায়। সঙ্গীতের জন্য একটী ঘরে পিয়ানো (Piano) আছে, তাতেও অনেক সময় আমোদে কাটিতে পারে। কত লোক তাস খেলে, জুয়া খেলে। সকলেই সময় কাটাইবার জন্য বাস্ত, সুতরাং লোকের সহিত আলাপ সহজেই ঘটয়া সায়। একত্রে বসিয়া দাড়াইয়া অল্প দিনের ভিতর এত আলাপ হয়,—উভয়ে যেন কত দিনের, কত পুরুষের আত্মীয়তা আছে। অন্তরের কথা অবধি বিনিময় হয়। বিদায় লইবার কালে বড়ই ব্যথা লাগে। জাহাজের উচ্চ কর্ম্ম চারীরাও প্রায়ই অতিশয় মিশুক ও অবসর কালে সকলের সহিত মিশিতে ও গল্প করিতে ভালবাসেন। এইরূপ নানা রকমে বেশ আনন্দে সময় কাটিয়া যায়।

 তবে যদি সমুদ্রে বেশী ঢেউ হয় ও জাহাজ টলে, তাহা হইলে শরীর কেমন আনচান্ করে, মাথা ঘোরে, দাঁড়াইতে কষ্ট হয় ও কাহারও কাহারাও, -বিশেষ প্রথম সমুদ্রযাত্রীর বমির বেগ আসে। (Sea-sickness) সামুদ্রিক পীড়া একেই বলে। দাঁড়াইবার যো নাই, মাথা তুলিবার যো নাই, কিছু খাইবার যো নাই, অনবরত বমির বেগ। বমি হইয়া গেলে আরাম বোধ হয়, তবে প্রায়ই কেবল মাত্র বমির বেগই আসে,—বমি হয় না; অথবা যদি কিছু উঠে, তাহা অতি বিকট পিত্ত কিম্বা অম্বল। জাহাজের মধ্যস্থল সর্ব্বাপেক্ষা কম দোলে,—তাই দ্বিতীয় শ্রেণীর ডেকের উপর হাওয়ায় মাথা