ভাষায় বুঝাইয়া দিলেন যে, আগস্তুক লোকটী ডাক্তার,—কলিকাতা থেকে চীনদেশ দেখতে এসেছেন। আর সদ্বংশীয় চীনে পরিবারের সঙ্গে আলাপ করিতে চান, তাই সঙ্গে আনিয়াছেন। শুনিয়াই অভিবাদন পূর্ব্বক আবার তিনি ঘাড় নীচু করিলেন। আমিও সর্ব্বান্তঃকরণে তাঁহাকে প্রত্যভিবাদন করিলাম।
যাইবার দুই তিন মিনিটের মধ্যেই ছোট পেয়ালা করিয়া ঠাণ্ডা, দুধ ও চিনিবিহীন স'বজে চা সকলের হাতে দেওয়া হইল। এইটি তাঁহাদের অতিথিকে অভ্যর্থনা করিবার ধান-দূর্ব্বা স্থানীয়। ইহা ঘরে সর্ব্বদাই প্রস্তুত রাখা হয়। সে চা-র গন্ধ অতি মনোহর, কিন্তু উহা কষা আস্বাদযুক্ত ও অতিশয় উত্তেজক। আবার পাঁচ মিনিট পরেই তখনি তৈয়ার করিয়া এইরূপ গরম চা সবাইকে দেওয়া হইল। চা-র পেয়ালাগুলি ছোট ছোট উনানে বসান।—সব শুদ্ধ হাতে লওয়া যায়। তাহা হইতে ভুরভুরে গন্ধ বাহির হইতেছিল। আমি কখনও চা পান করি না, কেবল এক চুমুক মাত্র খাইলাম। চা খাই না শুনে তাঁরা যারপর নাই বিস্মিত হলেন।
এইবার তাঁহাদের অহিফেন ধূমপান কবিবার সময় আসিল। ইহার জন্য ঘরের এককোণে বাঁশের তক্তপোষ আছে। তাহার উপর মাদুর বিছান। তার মাঝে একটী বড় কাচকড়ার রেকবীতে একটা চিমনীযুক্ত তৈলের ল্যাম্প আছে। কেরোসিন নয়, অন্য দেশী তৈল জ্বলে। আর সেই ল্যাম্পের চারিধারে দুই একটা চীনেমাটির পুতুল সাজান। তারমধ্যে একটী পা ভাঙ্গা চীনে রমণীর প্রতিমূর্ত্তি। গৃহকর্ত্তা সেই মাদুরে গিয়া বসিলেন। ধূম-পানের জন্য বাঁশের একটী মোটা নল সেই খানেই ছিল। সেটা প্রায় তিন ফুট লম্বা ও দেড় ইঞ্চি মোটা। ইহার মাঝে একটা গর্ত্তে একটী ফানেল বসান। তাহার ভিতরই মোমের মত নরম আফিমখণ্ড অন্য কি কি দ্রব্যাদির সহিত মিলাইয়া রাখিতে হয়। একটা