হইয়াছে বলিতে হইবে। এই চতুরা স্ত্রীলোকের হাতে চীন-সম্রাট আজ ৪০ বৎসর ধরিয়া বন্দী আছেন। তাঁহার কুট চরিত্র, জীবনের ইতিহাস ও কার্য্যাবলী এক বিচিত্র কথা। সংক্ষেপে তাহাই এখানে বলিতেছি।
এই স্ত্রীলোকটির নাম “তেজদী”; ইনি চীন জাতীয় নহেন। মাঞ্চুজাতীয় কোনও উচ্চ কর্ম্মচারীর কন্যা, পিকিঙে ইহাঁর জন্ম হয়। পিতা ইহাঁর তীক্ষুবুদ্ধি ও বিদ্যানুরাগ দেখিয়া, ইহাঁকে রীতিমত লেখাপড়া শিখান। চীন জাতীয় খুব অল্পসংখ্যক স্ত্রীলোকের ভাগ্যে এরূপ সুবিধা ঘটিয়া থাকে। সেই বিদ্যাশিক্ষার ফলেই আজ তিনি অত বড় বিশাল চীনরাজ্যের অদ্বিতীয়া অধীশ্বরী।
১৭ বৎসর বয়ঃক্রমকালে চীন-সমাটের সহিত ইহাঁর প্রথম দেখা হয়। তখন সম্রাট বিবাহিত। পূর্ব্বেই বলিয়াছি, চীনদেশে একটির বেশী বিবাহ করিবার নিয়ম নাই। কাজেই ইহাঁর রূপে গুণে অতিশয় মুগ্ধ হইলেও, সমাট ইহাঁকে যথশাস্ত্র বিবাহ কারিয়া পাটরাণী করিতে পারিলেন না। তবে ইহাঁকে “অপরা পত্নী” বা ছোট রাণী ভাবে রাখিলেন। এরূপ রাখার একটি মাত্র আছিলা এই ঘটিল যে, প্রথমা মহিষীর গর্ভে তাঁহার কোনরূপ সস্তানাদি হয় নাই। অচিরেই তেজর্দী— এক পুত্র সন্তান প্রসব করিয়া স্বামীর বড়ই প্রিয়পাত্রী হইলেন। তাঁহার চাতুর্য্যেরও অন্ত নাই। এই অবসরে চীনের বহুদিনকার পুরাতন একটি প্রথা কোথা হইতে পুনরুত্থাপন করিয়া সম্রাটকে বুঝাইয়া দিলেন যে, চীনরাজের দারান্তর পরিগ্রহ চলে। রাজাও সেইরূপ বুঝিয়া যথাযথ ঘোষণা করিলেন। প্রথম মহিষী যেমন পূর্ব্ব সাম্রাজ্যের অধিশ্বরী ছিলেন, তেজদীও তেমনি পশ্চিম সাম্রাজ্যের অধিশ্বরী হইলেন। তেজদীর তাহাতে ক্ষমতা আরও বাড়িয়া গেল।
কিছু দিন পরে চীনদেশে টেপিঙ-বিদ্রোহ আরম্ভ হইল। পাছে, প্রথম স্ত্রীর গর্ভে রাজার সন্তান হয়, এই আশঙ্কায়, এই বিদ্রোহের