পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/১৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭২
চীন ভ্রমণ।

আমার খাবার আনাইতেন; তাঁদের দেশের যে যে খাবার খাইতে আমার ভাল লাগিতে পারে, সেগুলি দেখাইতেন ও তাহার উপকরণ বলিয়া দিতেন। আমি দুটী একটা চাকিয়াছি মাত্র,—তার আস্বাদ আমার ভাল লাগে নাই। সব জিনিষই সিদ্ধ করিয়া রাখা—তাতে মোটেই মসলা নাই; আমাদের মুখে খাইতে বেতার হইলেও উহা সহজে হজম হয়। এত মাছ, কিন্তু যে গরম গরম মাছ ভাজার মত উপাদেয় সামগ্রী আর নাই, তা চীনেরা খাইতে জানে না। পরিমাণে ইহারা এত অল্প আহার করে যে, আমরা সকলেই তাহাদের অপেক্ষা বেশী খাইতে পারি। “চপ-ষ্টীক্” দিয়া তাহাদের মত একটী একটী করিয়া ভাত মুখ তুলিয়া খাইবার চেষ্টা করিলাম, কিন্তু অভ্যাস দোষে আপনা আপনিই বিস্তৃত মুখব্যাদান হইয়া পড়িতে লাগিল! অন্য কোনও দেশের লোক হইলে এইরূপ অনভ্যাসের কাণ্ড দেখিলে হাসিতেন। কিন্তু তাঁহাদের গম্ভীর মুখে হাসি ফুটিল না। শেষে তাহা আর ভাল লাগিল না,—চামচে করিয়া আহার করিলাম। তাঁহারা যখন অর্দ্ধেক মাত্র শেষ করিয়াছন, আমার তখন আহার শেষ হইয়া গেল।

 এই সময়ে বাহিরে একটি গোলমাল উঠিল। যেমন সব দেশেই, হ’য়ে থাকে, স্ত্রীলোকরা আগে জানালা দিয়ে দেখাতে ছুটলেন এময়ের বাজারে একজন অফিম-খোর শীর্ণকায় বৃদ্ধ চীনেম্যান এক আফিমের দোকান হতে ৫ সেণ্ট (৪ পয়সা) মূল্যের আফিম চুরি করেছে, তাই অনেক লোক মিলে একত্রে তাকে নিষ্ঠুররূপে প্রহার করছে। যাদের দ্রব্যে হাত দিয়েছে, তার কেহ নাই; অন্যে, হয়ত অপরাধ না জানিয়াই মরচে। অত মার খেয়েও সে কাঁদচে না বা মিনতি করছে না। আমার মনে হ’তে লাগল, যেন তার মারখেলেও লাগে না; অপমানিত হইলেও আসে যায় না। বেশী আফিম খেলে মানুষের শরীরের ও মনের অবস্থা এমনই হ’য়ে থাকে। তার পর