পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/১৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
এময়।
১৭৫

আমি খুব চেষ্টা করিয়াও সামান্য আবশ্যকীয় দু'চারিটী কথা ভাল করিয়া শিখিতে পারি নাই। চীন ভাষাটী মনুষ্যজাতির অতি আদিম অবস্থার ভাষা। শব্দগুলিতে বিভক্তির কোন পার্থক্য নাই। যে কথার মানে “আমি, সেই কথাই “আমার” “আমাকে” ইত্যাদি অর্থে ব্যবহৃত হয়। প্রতি কথাটী একটী ছবির মত হরফে লেখা হয়। ছত্রগুলি ডান দিক হইতে আরম্ভ হইয়া উপর হইতে নীচের দিকে লেখা হয়। আমি জাহাজের একজন চীনে কর্ম্মচারীকে “পীড়িত” এই কথাটী চীনে ভাষায় লিখতে বলিলাম; তিনি পারিলেন না। বলিলেন,—“ও কথাটী আমি শিখি নাই!” ইহা ছাড়া চীনে ভাষা শিখিবার আর এক অসুবিধা এই যে, অতি নিকটবর্ত্তী নানা স্থানে ভিন্ন ভিন্নি ভাষা প্রচলিত, তাদের মধ্যে এত প্রভেদ যে, এক জন অপরের কথা বুঝিতে পারে না। আমি মুখস্থ করিয়া শিখিয়াছিলাম,— “খী মান্ সান্” মানে, —“আমাকে বাজার দেখাতে নিয়ে চল", গাড়ী ওয়ালাদিগকে বলিলে কহ বুঝিত, কেহ বুঝিত না।

 কিন্তু যদিও কথার উচ্চারণে প্রভেদ দেখা যায়, —তথাপি লিখিত ভাষা চীনের সকল স্থানেই সমান। লেখার কোনও প্রভেদ নাই। যাহারা কথা বুঝিতে পারে না, তাহারা লিখিলে পরস্পরের মনের ভাব বুঝতে পারে। একপ যে শুধু চীনেই আছে তাহা নহে, —ইউরোপেও কি ইংরাজ, কি ফরাসী, কি জার্ম্মাণ, কি ইটালিয়ান সকলেরই লিখিত ভাষা রোমান্,—কিন্তু ভাষা গুলির উচ্চারণ এবং অন্য অনেক বিষয়েই প্রভেদ।

 চীনে বিদ্বান লোকের বড়ই সম্মান। কালি কলম কাগজ ইত্যাদি লিখিবার উপকরণ সকল দেবতার দ্রব্য বলিয়া গণ্য। লোকে পুণ্য কাজ বিবেচনায় পথে ছেঁড়া কাগজ ও বই কুড়াইয়া বেড়ায়। সেগুলি ফেলিবার জন্য রাস্তার ধারে ঝুড়ী রক্ষা করা হয়। সেখান থেকে