রেঙ্গুন।
ইরাবতীর পাইলট আসিয়া রাত্রেই জাহাজে ছিল। ভোর ৫টার সময় জাহাজ ছাড়িল, তখন পূর্ব্বদিক লাল হইয়া আসিতেছে মাত্র। একটু পরেই আলোক-রেখা ফুটিয়া উঠিল। দুই ধারে শস্যশ্যামলা তীরভূমি দেখা গেল। যতদুর চক্ষু যায়, কেবল সবুজ রঙ বই আর কিছু নাই। ভূমি এত উর্ব্বরা ও ধান এত প্রচুর পরিমাণে জন্মে যে, প্রতিবৎসর এক লোয়ার বর্ম্মা হইতেই মালয়, চীন ও জাপান, এমন কি ভারতবর্ষ ইউরোপ ও আমেরিকা প্রভৃতি বহু স্থানে পর্য্যাপ্ত পরিমাণ চাউল রপ্তানি হয়। মোট সাড়ে তের কোটি টাকারও অধিক চাউল বিদেশে যায়।
অল্পক্ষণ পরেই রেঙ্গুন বন্দরের নিকটবর্ত্তী হইলাম। অতি সুন্দর কাষ্ঠ নির্ম্মিত বাড়ী সকল দেখা যাইতে লাগিল। দুই পাশেই বড় বড় কল-কারখানা ও উচ্চ উচ্চ সোণালী রংয়ের বৌদ্ধ-মন্দির-চুড়া (Pagoda) সকল গগনস্পৰ্শী হইয়া দাঁড়াইয়া আছে। অসংখ্য অর্ণবপোত ও “সামপান” নামক দেশী নৌকা ইরাবতীর স্রোতে ভাসিতেছে।
কলিকাতা হইতে জাহাজ আসিলেই প্লেগের জন্য এখানে বড় কড়া পরীক্ষা করে। পাছে প্লেগ আক্রান্ত রোগী বা প্লেগ বিষে দূষিত দ্রব্যাদির সংস্পর্শে রেঙ্গুনে প্লেগ রোগ প্রবেশ করে, তাহার জন্য সাবধান হওয়াই এই পরীক্ষার উদ্দেশ্য। কোন ও লোকের উপর সন্দেহ হইলে, তাহাকে জাহাজ হইতে নামাইয়া লইয়া (Inspection Camp)পরীক্ষা-তীবুতে রাখা হয়। তাহার ব্যবহৃত কাপড়-চোপড়গুলি ধোঁয়া,