পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/১৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
এময়।
১৮১

বিষাদ সঙ্গিত গায়। শুনালে যেন পাথর ও গলে। এইরূপে সারা জীবন একনিষ্ঠ থাকিয়া তিনি প্রতি সন্ধ্যায় সেই নির্জ্জন স্থানে, গিয়া অশ্রুবর্ষণ করিতেন।

 এময়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধার জন্য ভিন্ন ভিন্ন জাতি ভিন্ন ভিন্ন পোষ্টাপিস স্থাপিত করিয়াছে। চীন-সম্রাটের একটী, জাপানের একটা, ইংরাজের একটী, আমেরিকার একটা, ইত্যাদি। পূব্বেই বলিয়াছি, এখানে ইউরোপীয় জাতিদের পরস্পর কথাবার্ত্তার জন্য ইংরাজীই ব্যবহৃত হয়। তাহার একটী কারণ, আজ কাল সকল ব্যবসার স্থানে ইংরাজই প্রধান, আর একটি কারণ এই যে, এ সকল স্থানে আমেরিকার প্রতিপত্তিই বেশী, আবার তাহাদেরও ভাষা ইংরার্জী।

 হংকং ও এময়ে বিস্তর জাপানী দোকানদার আছে। চীনেম্যানর বিলাতী জিনিষ বেচে; জাপানীরা নিজ দেশের শ্রমজাত দ্রব্যাদি বেচে। আজ ৪০ বৎসর ইউরোপীয়জাতির সহিত মিশিয়া জাপান উন্নতির শিখরে উঠিল, চীন পূর্ব্বাবস্থাতেই রহিয়াছে। জাপানীদের ইংরাজী পাষাক-পরা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মূর্ত্তীগুলি দেখিতে মোটেই সুশ্রী নহে। চীনেম্যানরা তাহাদের সহিত তুলনায় অনেক টেঙা, অনেক ফরসা, অনেক সুশ্রী। তাহারা যেমন গম্ভীর প্রকৃতি, জাপানীরা তেমনি আমোদআহলাদ প্রিয়। দুইটী জাতিকে পাশাপাশি দেখিলে আকাশ-পাতাল তফাৎ মনে হয়। ইহারা কখনই দুইটি নিকট সম্পর্কীয় জাতি হইতে পারে না। বিশেষ দুইটী জাতির স্ত্রীলোকের মধ্যে কত প্রভেদ দেখা যায়। জাপানী বয়স্থা স্ত্রীলোকেরা পর্যন্ত্য ঘুড়ি-উড়ান প্রভৃতি আমোদে যোগ দেন, আর যে সে পুরুষের সঙ্গে মিশিতে লজ্জা বা সঙ্কোচ বোধ করেন না। কিন্তু চীনে সম্পূর্ণ ভিন্ন।

 এময়ে আজ আমার শেষ দিন বলিয়া সারাদিন ঘুরিয়াছিলাম। ফিরে এসে সুইচিনের সঙ্গে অনেক বিষয়ে কথা হ'চ্ছিল।