পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/১৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পরিশিষ্ট

 যাইবার সময় দেখিবার সেখানে কিছু পারি দেখিয়াছিলাম। অসিবার সময় সেই সব ছবি অন্তশ্চক্ষুর সামনে উজ্জ্বলতর হইয়া আসিত। যে সকল দৃশ্য বা ঘটনাগুলি বিভিন্ন স্থানে ও ভিন্ন সময়ে দেখিয়াছি সে গুলি পরস্পরের সহিত যথানিয়মে সম্বন্ধ হইয়া অভিনব ভাবে মনে জাগিত। প্রতিটি যেন অঙ্গুলি নির্দ্দেশ করিয়া বিশ্বরাজ্যের বা মানব প্রকৃতির নিগূঢ়তত্ত্ব কথা জানাইয়া দিত, মনে হতো যেন ব্রহ্মাণ্ডের সকল ঘটনা সকল নিয়ম একই সূত্রে বাঁধা।

 যে কারণে মানুষের উন্নতি অবনতি হয় সেই কারণেই দেশের শ্রীবৃদ্ধি বা অধঃপতন ঘটিয়া থাকে। চারিদিকে পরিবর্ত্তনের স্রোতের সহিত সামানে অগ্রসর হইতে না পারিলে স্থানচূতি হইতেই হইবে। তাই আসিয়ার জাতিসকল পরহস্তে স্বাধীনতা হারাইয়া অশেষ নির্য্যাতন সহিতেছি। যারা পূর্ব্ব হইতেই পরের করতলগত হইয়াছে তাদের আর আশা নাই। চীন জাপান এক কোনে পড়িয়া এখনও গ্রাসে আসে নাই। তাই জাপান সামলাইয়া লইয়াছে। চীন এখনও কত অনিশ্চিত অবস্থায় রহিয়াছে। এখন অবধি সাবধান হইবার বিশেষ চেষ্টাও নাই। আসিয়ার অন্যান্য দেশের মত প্রাচীন স্মৃতিতে বিভোর হইয়া এখনও নিরুদ্যম।

 ভাগ্যচক্র যে আপনিই উঠে নাবে সে দৃষ্টান্ত হাজারেও একটা দেখা যায় না। যে উঠে সে আপনার চেষ্টাতেই উঠে। যে উন্নত সে সদাই সচেষ্ট। এত দেশের মধ্যে ধনধান্যপূর্ণ ব্রহ্মদেশেরই সর্ব্বাপেক্ষা দুরবস্থা দেখিলাম। মলয় তো আরও নগন্য। চীনের শক্তি আছে কিন্তু বিকাশের চেষ্টা নাই। আর নিজের চেষ্টায় জাপান কত উন্নত।