পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/১৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট।
১৮৭

 ইউরোপের সহিত সংস্পর্শে এসিয়ার চোখ মিলিলেও দুর্ব্বলতা দিন দিন বাড়িতেছে। পলে পলে তার রুধির শোষিত হইতেছে। গাছ যেমন শিকড় বিস্তার করিয়া উর্ব্বরা ক্ষেত্র হইতে শত পথে সার রস শোষণ করে—রেল জলজান পথ ঘাট ও বিদেশীয় ব্যবসাদি বিস্তারে আসিয়ার সকল গুপ্ত সম্পদ তেমনি শোধিত হইয়া গেল। যে পথে গিয়াছিলাম তার যেখানেই চোখ মেলা যায় যে জিনিষই নজর পড়ে, সবই বিদেশীয়। এমন শোষণে আর কতদিন বাঁচিবে। আমার মনে হতো ইউরোপের সহিত জীবন সংগ্রামে আসিয়ার সকল জাতই পরিশেষে সমূলে ধ্বংশ হইবে।

 এই গেল দেশ গুলির সামাজিক অবস্থার কথা। সাংসারিক অবস্থা যথা সম্ভব আমি আরও মনোযোগের সহিত দেখিয়াছি। দেখিতাম প্রাচ্যজাতির সকলেই অল্পে তুষ্ট। তাদের সনাতন প্রকৃতি স্বভাবত পরস্বে ললুপ নয়। কিন্তু নিজের অবস্থায় এত সন্তুষ্ট থাকতেই তারা স্থানভ্রষ্ট ও লঞ্ছিত হইতেছে।

 এ সকল দেশেই দেখলাম সংসার লোকের জুড়াইবার স্থান। বাহিরের যত ক্লেশ নির্যাতন আপনার লোকের কাছে যাইয়া ভুলিয়া যায়। অতি অভাবেও একত্রে থাকিয়া সুখ বোধ করে।

 সকল দেশেই শিশু পরম আদরের ধন। ভবিষ্যতে যারা বড় হয়ে স্ব স্ব ক্ষেত্রে নিজ নিজ দর্পে মেদিনী কাঁপাবে তারা কেমন অসহায় হয়ে আসে দেখ। আর স্ত্রী চরিত্রেরই কথাই নাই। সকল দেশেই মনে হতো পৃথিবীর যাবতীয় সৌন্দর্য্য ও সদ্গুন দিয়ে তাঁহাদের প্রতি পরমানু গড়া।

সমাপ্ত।