পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রেঙ্গুন।
১৫

সেই কারণে রেঙ্গুনে পানীয় জলের বড়ই কষ্ট। যেখানে-সেখানে এক একটা প্যাগোড়া বা বুদ্ধদেবের মন্দির আছে। অনেক রাস্তার নাম সেই সকল স্থানের প্যাগোড়ার নামে হইয়াছে। রেঙ্গুনে প্রধানতঃ দুইটি দেখবার জিনিষ আছে;—পশ্চিম রেঙ্গুনের দিকে প্রধান পাগোডা ও পূর্ব্ব রেঙ্গুনের দিকে লেক পার্ক।

 পূর্ব্বেই বলিয়াছি রেঙ্গুন সমতল ভূমি; তবে নদীর ধার হইতে জামি, ক্রমেই উচ্চ হইতে উচ্চতর হইয়া কতকগুলি ছোট ছোট পাহাড়ে গিয়া মিশিয়াছে। প্রধান প্যাগোড়া(Grand Pagoda) এইরূপ একটি পাঞ্ছাড়ে অবস্থিত। পাহাড়টী প্রায় পাঁচ শত ফিট উচ্চ হইবে। নদীর ধার হইতে সেখান পর্যন্ত এঞ্জিনের ট্রাম চলে; শত শত যাত্রী অহরহ তথায় উপাসনার জন্য গিয়া থাকে। আমিও অনেকবার সে প্যাগোড়াটা দেখিয়া আসিয়াছি। ঐ দৃশ্যটা আমার বড়ই ভাল লাগিত।

 নিম্ন হইতে স্তরে স্তরে চওড়া পাহাড়ের সিঁড়ি উঠিয়াছে। তাহার উপর বরাবর খিলান করা ছাত।তাহাতে অনেক প্রস্তরমূর্ত্তি রক্ষিত আছে দুই পাশে যাত্রিদের বসিবার জন্য কাষ্ঠাসন আছে ও তথায় ব্রহ্মদেশীয় স্ত্রীলোক্লেরা পূজার উপযোগী দ্রবাসম্ভার বেচিতেছে। ধূপ, ধুনা, বাতি, চুরুট, ফুল, ধ্বজা ইত্যাদি। কেহ বা আয়না সামনে করিয়া চুল আঁচড়াইতেছে। কেহ বা মুখে চন্দন কাঠের পাউডার মাখিতেছে। কেহ বা সেই খানেই বসিয়া পরিতোষের সহিত অন্ন সেবা করিতেছে। মন্দিরে উঠতে উঠিতে পায়ে ব্যথা হইয়া যায়। উঠয়াই সম্মুখ একটা বিস্তীর্ণ উচ্চ পরিখাবেষ্টিত বাঁধান উঠান। তাহার মধ্যদেশে সেই প্যাগোডাটী স্বর্ণচুড়া বিস্তার করিয়া রেঙ্গুনের শান্তি ঘোষণা করিতেছে। মন্দিরের ভিন্ন ভিন্ন কক্ষে প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড বুদ্ধদেবের মূর্ত্তি প্রতিষ্ঠিত। অনেকগুলি মূর্ত্তি ১৫ হইতে ২০ ফুট উচ্চ।বসিবার