পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ব্রহ্মদেশ।

ইতিহাস ও সামাজিক রীতি-নীতি।

 ইতিহাস পড়িয়া দেখা যায়, প্রায় সকল পুরাতন দেশের অধিবাসীদেরই ধারণা যে, তাহারা দেবতা হইতে উৎপন্ন, আর তাহাদের দেশের ব্রাজবংশ স্বয়ং ঈশ্বরের অংশ-সম্ভুত। জাপানীদের এইরূপ বিশ্বাস, —পুরাকালে দুই দেবযোনি-ভাই-ভগিনী—স্বৰ্গ হইতে সেতুপথে জলময়ী পৃথিবীর জলকল্লোল দেখিতে আসিয়াছিলেন। ভগিনীর মুক্তার মালা ছিড়িয়া জলে পড়িল, আর জাপান দ্বীপ সৃষ্টি হইল। সেই দ্বীপে ভাই-ভগিনী স্ত্রী-পুরুষ-ভাবে রহিয়া গেলেন। ইহা হইতেই জাপানের রাজবংশের আরম্ভ। চীনেদেরও কতকটা এইরূপ ধারণা। সে কথা চীন প্রবন্ধে বলিব। কিন্তু ব্রহ্মদেশের রাজবংশের উৎপত্তি এরূপ দেবযোনি হইতে নহে। তাহদের শাক্যবংশ ও শাক্যসিংহ লইয়াই সব।

 বুদ্ধদেব জন্মিবার বহু শতাব্দী পূর্ব্বে শাক্যবংশের কোনও রাজা আসিয়া ব্রহ্মদেশে রাজবংশ প্রতিষ্ঠিত করেন। পরে বুদ্ধদেবের পাচগাছি চুল লইয়াই রেঙ্গুনের ভিত্তি স্থাপিত হয়। বৌদ্ধশাস্ত্রের মতানুসারে, হিন্দুশাস্ত্রোক্ত ব্রহ্মা হইতেই তাহারা সকলের উৎপত্তির কথা বিশ্বাস করে। তাই তাহারা নিজেরা ও ‘ব্রহ্মা’ বা 'বর্ম্মা’ নাম লইয়াছে।

 ব্রহ্মদেশের লোক বুদ্ধগতপ্রাণ। হিন্দুস্থান তাহদের চক্ষে বড়ই পবিত্র স্থান বলিয়া বিবেচিত,—তাহাদের দেবতার লীলাভূমি, তাহাদের মহা তীর্থধাম। অনেকে বুদ্ধগয়া, রাজগৃহ প্রভৃতি স্থানে তীর্থ করিতে আসে। রেঙ্গুনের যে বড় প্যাগোডার কথা বলিয়াছি, তাহা বুদ্ধদেবের