মরাল গ্রীবাটী সকলকে দেখাইতে ভালবাসে। তাই প্রাণান্তেও তাহারা মাথায় ঘোমটা দেয় না। এ অঞ্চলে কোথাও স্ত্রীলোকদের মস্তকাবরণের (head dress) প্রচলন নাই।
যেমন একধারে সহরঠাসা লোক ও দোকান তেমনি অন্য দিকে ফাঁকা স্থানও আছে। সেখানে ধনীদের বাগান ও পাতরের বসত বাড়ী; এবং গরীবদের বাঁশ ও নারিকেল পাতা নির্ম্মিত কুঁড়ে ঘর। বড় বড় নারিকেল গাছের বন—এক একটী গাছ আমাদের দেশের গাছ অপেক্ষা তিন চারিগুণ উচ্চ; তাহার ফলগুলিও তদনুরূপ বড়। কিন্তু তার ভিতরের শাঁস সেরূপ পুরু নয় বা এদেশের নারিকেলের মত মিষ্টও না। রাশি রাশি নারিকেল পিনাঙ হইতে রেঙ্গুনে আমদানি হয়। বহ্মদেশীয় স্ত্রীলোকেরা তাহা কুচি কুচি কাটিয়া চিঁড়ে ও নানাবিধ খাবার প্রস্তুত করে এবং পচা মাছের সঙ্গে মিশাইয়া “নপ্পি” নামক চাটনীও প্রস্তুত করে। নারিকেলের মালাটি হুকার খোলের জন্য ও ব্যবহৃত হয়। পিনাঙ এর বাঁশগাছগুলিও দেখিতে অতি সুন্দর। ইহাদ্বারা চেয়ার কৌচ আদি অনেক দ্রব্য প্রস্তুত হয়; সে দ্রব্যগুলি অতি সুচারু ও দামেও অতি সস্তা। লজ্জাবতী লতায় জমি একেবারে আচ্ছন্ন। লাল গোলাকার ফুলগুলির পাশে সতেজ পাতাগুলি মানুষের পদসঞ্চারে, বেগগামী রিকসের হাওয়ায়, ধূলাতে বা মাছির ভরে অহরহ বুঁজিতেছে ও খুলিতেছে। আমি আমার পকেট বহিতে পুরিয়া ঐ লজ্জাবতীর অনেকগুলি পাতা ও ফুল আনিয়াছি।
যে বন্দরে যখন জাহাজ লাগিত,আমি তখনই আমার “বয়"কে আমার কামরায় খাবার রাখিতে বলিয়া সহর দেখিবার জন্য জাহাজ হইতে নামিতাম। যদিও বিদেশ-বিভুঁই, তথাপি যেখানে সেখানে যাইতে ও বেড়াইতে আমার একটুও ভয় কারিত না! সর্ব্বদাই মনে হইত, সুশাসিত রাজ্যে সকলেরই ধন-প্রাণ নিরাপদ। ভীষণ বর্ব্বর