পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সিঙ্গাপুর।
৫৭

গাহিতে গাহিতে মুখভঙ্গী করিয়া তুলে ও ফেলিয়া জখম করে, এক একটি চীনে কুলি অবলীলাক্রমে তাহা বহন করিয়া থাকে। কিরূপ দ্রুতবেগে ও কতকক্ষণ ধরিয়া ইহাৱা যাত্রীসহ রিকস গাড়ী টানিয়া লইয়া বেড়ায় তাহা দেখিলে তাহাদের কত যে ক্ষমতা তাহা বুঝা যায়। বটানিকাল গার্ডেন দেখিতে যাইবার কালে ঘন ছায়াযুক্ত বড় বড় নারিকেল-নিকুঞ্জের ভিতর দিয়া সুগঠন চীনে রিকস ওয়ালা দ্বারা যখন ' তীর বেগে আমাদের রিকস গাড়ী নীতি হইতেছিল, সে স্থানে - সে সময়কাল্প আমার মনের আনন্দ ভাষায় বুঝান যায় না।

 এই পরিশ্রমের সহিত তাহাদের আহারের তুলনা করিলে বিস্মিত হইতে হয়। দিনে-তিনবারে ৬পেয়ালা মাএ ভাত তরকারী ও অতি সামান্য মাত্র মাংস ও কিছু মাছ খাইয়া ইহাদের দেহ কেমন করিয়া। এত পুষ্ট ও বলবান থাকে, তাহ। বুঝা যায় না। আমার মনে হইল,আমাদের দেশের সাধারণ লোকেরা দুই বেলায় অন্ততঃ ইহাদের একজনের দৈনিক আহারের দুই তিন গুন আহার করে। অল্প আহার ও কায়িক পরিশ্রমে এবং মনের চির প্রফুল্লতাতেই ইহাদের শরীরে বলাধান করে। সু-হজমের যে সব লক্ষণ,তার সব গুলিই এদের ভিতর দেখা যায়। এর ঘুমাবে একেবারে অকাতরে,—ঠিক যেন মৃত ব্যক্তির মত। মাদুরে শুয়ে এবং বাশ বা কাঠের বালিশ মাথায় দিয়ে যে অবস্থায় শুইবে,সেই অবস্থায়ই উঠিবে -একবারও পাশ ফিরে না। এদের প্রতিদিন মলত্যাগের প্রথা নাই,—তিন চার দিন অন্তর,যখন আবশ্যক হইবে,তখন যাইবে। আর সে দাস্তও যত সুহজমব্যঞ্জক হইতে হয়। বায়ুর প্রাচুর্য্য বা তরলতার লেশ মাত্র তাহাতে নাই। অতি অল্পমাএ সময়ে ইহাদের মলত্যাগ সমাধা হয়।

 এদের পোষাক ঢলঢ’লে ইজের ও কোট; তবে কেহ কেহ গা' খুলিয়াও কাজ করে। চীনজাতি বড় নীলরঙ প্রিয়। তাদের পোষাক