তাদের হাতে সঙ্গে সঙ্গেই হইয়া যায়। গালি, ঘুষি, চপেটাঘাত, যষ্টিপ্রহার ও চীনেদের বিনানী ধ’রে টানিয়া উৎপীড়ন,—ইহা প্রায়ই দেখা যায়। লঘুপাপে গুরুদণ্ড সচরাচর হইয়া থাকে। শিখ পাহারাওয়ালা একবার হাক দিলেই হ’ল-সকল লোকই ভয়ে কাঁপে। আমরা তাদের সঙ্গে হিন্দীতে কথা কহিলে, তাদের আর আনন্দের সীমা থাকিত না। দেশের লোক দেখিয়া তাদের যেন আত্মীয়তার স্পৃহা। জাগিয়া উঠিত। চীন রিকসাওয়ালাকে আমাদিগকে দেখাইবার স্থান সকল বুঝাইয়া দিত, এবং আমাদের যেন কোনও বিষয়ে অসুবিধা না ঘটে, সে সম্বন্ধেও শাসাইয়া দিত। এখানে মাদ্রাজীৱও অসদ্ভাব নাই। তারা অনেকেই সাহেবদের চাকরী করে; অনেকে স্বাধীনভাবে নিজে নিজে দোকান করিতেছে।
আৱ স্ত্রীলোকের তা সংখ্যা নাই! এত স্ত্রীলোক কোথাও কখন দেখি নাই। যত বিভিন্ন জাতীয় স্ত্রীলোক আসিয়া এখানে জুটিয়াছে, তার মধ্যে জার্ম্মাণদেশীয় ইহুদী ও জাপানী স্ত্রীলোকই বেশী। তাহারা যেখানে থাকে সে পথ দিয়া চলিলেই “আপনার সঙ্গে একটী মাত্র কথা কহিতে চাই” স্ত্রীকণ্ঠ উচ্চারিত এই কথাগুলি অহরহ শুনিতে পাওয়া যায়। সহরের অনেক স্থানে কেবল তাদেরই বসতি। সেই স্থানেই থিয়েটার, সেই স্থানেই হোটেল, সেই স্থানেই মদের দোকান। সারারাত্রি দিনের মত জনতা। ঘুরে ঘুরে বড় পিপাসা হওয়ায় চীনে রিক্সওয়ালাকে অঙ্গভঙ্গী করিয়া,—সঙ্কেতে বুঝাইয়া দিলাম যে জল থাইতে চাই। সে মদের দোকানে নিয়ে গেল। তারাই ২০ সেণ্ট বা ৫আনার বিনিময়ে লেমনেড় ও বরফ খাওয়াইল। একটি ফরাসী রমণী আসিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন,— “আপনি কি খানিক ক্ষণের জন্য উপরে আসিয়া একটু বিশ্রাম করিবেন না?” সে স্থলেও চীনে স্ত্রীলোকের গাম্ভীর্য্য যায় নাই, চারিদিকের সাজসজ্জা শব্দবিন্যাস ও অঙ্গ-বিভ্রমের মাঝে তাদের গাম্ভীর্য্য অক্ষুণ্ণ আছে।