চীন জাহজে যাত্রিদল
রেঙ্গুন হইতে চীন জাহাজ ছাড়িয়াছিল। জাহাজে সকল জাতীয় সকল শ্রেণীর যাত্রী। প্রতি বন্দরে কতক লোক উঠিল, কতক নামিল। একটি বাড়ীতে যেমন অনেক লোক থাকে, জাহাজেও সেইরূপ সকল যাত্রিই একত্রে কাল যাপন করিত; সর্ব্বদা দেখাসাক্ষাৎ ও মেশামিশি হইত। বিভিন্ন জাতীয় লোকদের এইরূপ একত্রে দেখিয়া তাহাদের আকৃতি ও আচার-ব্যবহারের যে সকল পার্থক্য মনে হইতে, তাহা বুঝাইবার জন্য এই কয়টি ঘটনা লিখিলাম। এখানে তাহাদের প্রতি কার্য্য লক্ষ্য করিতাম। তীরে নামিয়া লোকদের দেখিলে এরূপ পুঙ্খানুপুঙ্খ রূপ দেখা যায় না।
পিানাঙএ একটি চীনে বালক উঠিল, সে আমার কথাবার্ত্তা সম্বন্ধে অনেক কাজে সাহায্য করিত। তার পিতা গরিব লোক, খাবার ফিরি করিত। অনেক বৎসর বিদেশে কাজ করিবার পর সপরিবারে বাড়ী যাইতেছে। ছেলেটি পিনাঙ্ মিশনরী স্কুলে বিনা বেতনে ইংরাজী পড়িতেছে। খুব বুদ্ধিমান ছেলে, দু'কথা বলিলেই মনের ভাব বুঝিয়া নেয়। আমি যে মুখস্থ করিয়া একটু চীন ভাষা শিখিতে চেষ্টা করিতেছিলাম, তাই অভ্যাস করিবার জন্য ইহার সঙ্গে দুই একটি চীনে ভাষায় কথা কহিতাম। বালকটীর নাম “উসিন্”। তাহার সঙ্গে দেখা হলেই ব'লতাম,—"উসিন্ লাই চুপেং।” অর্থাৎ, -"উসিন্ আমার কাছে এসো। তোমাদের দেশের দুই একটি খবর ব'লে দাও।” শব্দটা ঠিক হইবে বলিয়া আমি আবার চীংকার করিয়া বলিতাম, আর জাহাজ শুদ্ধ চীনেম্যানেরা হাসিয়া খুন হইত। আমি সেই সময়ে চীনে স্ত্রীলোকদের মুখের দিকে চাহিতাম, হাসিবার কথা হইলেও