আর একটি দম্পতীর কথা বলি। স্ত্রীলোকটি ফরাসী জাতীয়। প্রথম স্বামী ইঁহাকে কোনও কারণে আদালতের সাহায্য লইয়া পরিত্যাগ করেন। তারপর অনেক দিন ইনি থিয়েটারের অভিনেত্রী ছিলেন। চার পাঁচ বৎসর হইল, এক জন ইংরাজ যুবক সওদাগর হঁহাকে বিবাহ করিয়াছেন। দুটি মেয়ে হইয়াছে। মেয়ে দুইটীর তাহাদের মারই মত চঞ্চল নীল চোখ। বিবাহের ছ'মাস পরেই প্রথম কন্যাটি ভুমিষ্ঠ হয়। এখন ইনি সংসারী হইয়া বেশ সুখী হইয়াছেন। সর্ব্বদা শেলাইয়ের কাজ লইয়াই থাকিতেন। মেয়েদের যত্ন আদরের সীমা ছিল না। কাহারও সঙ্গে মিশিতেন না। স্বভাবের কোনওরূপ চাঞ্চল্য নাই। প্রতি কথাবার্ত্তা আচার-ব্যাবহার সবই উচ্চ আদর্শের। অতীত জীবন হেয় হইলেও এখন তাঁহার প্রকৃতি একেবারে বদলাইয়াছে। তার আর বৈচিত্রা কি? একবার ভুল হইলে কি আর শোধরান যায় না?
একটা ছোটছেলে বার বার বমি ক’রছিল ও যন্ত্রণায় অত্যন্ত কাতর হয়ে কাঁদছিল ব'লে তার বাবা আমাকে একবার ছেলেটীকে দেখতে নিয়ে গেল। তারা গরীব ডেক যাত্রী। স্ত্রীলোক যাত্রীদের থাকিবার জন্য যে ডেক আছে, আমি সেখানে গিয়ে দেখিলাম ছেলেটী মার কোলে শুয়ে বড়ই কাঁদছে। মা ব্যস্ত হ'য়ে কান্না থামাবার জন্য অনবরত মাই দিচ্ছেন, আর ছেলেটী অতি আগ্রহের সহিত মাই খেয়ে তখনই জমা দুধ বমি করিয়া ফেলিতেছে। খাবার দোষেই এরূপ হইয়াছে, ইহা নিশ্চয় করিয়া আমি মাই দিতে মানা করিলাম ও তাহার পিপাসা শান্তির জন্য একটু একটু মৌরীর জল দিতে বলিলাম। শিশুটী অল্পক্ষণেই সুস্থ হইল দেখিয়া তার বাপ মার আর কৃতজ্ঞতার সীমা রহিল না। পিতা আমার কাছে এ খবর বলতে এলে আমি তাহাকে বুঝিয়ে দিলাম যে-ছেলেদের যত রোগ অধিকাংশই খাওয়ার দোষেই হয়। আগ্রহে দুধ খেলেই যে ক্ষুধা পাইয়াছে বুঝিতে