পাতা:চূর্ণ প্রতিমা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
দারোগার দপ্তর, ১৬৮ সংখ্যা।

 এইরূপ প্রশংসাবাদ শুনিয়া নফর আন্তরিক সন্তুষ্ট হইল। বলিল, “আপনি ভিতরে আসিয়া দেখুন। দোষ গুণ নিজেই বিচার করিবেন।”

 আমার উদ্দেশ্যও সেইরূপ ছিল। নফরের সঙ্গে তাহার দোকানের ভিতর প্রবেশ করিলাম। দেখিলাম, ঘরের একটা কোণে আর একখানি চৌকি রহিয়াছে; কিন্তু সেখানে কোন লোক নাই।

 নফর আমাকে আর একটা ঘরে লইয়া গেল। দেখিলাম, সেখানে একটা কাচের আলমারির মধ্যে নানারকমের ভাল ভাল পুতুল সাজান রহিয়াছে। প্রায় আধ ঘণ্টাকাল পুতুলগুলি অতি মনোযোগের সহিত দেখিলাম, যতবার দেখি, আশ যেন আর মেটে না। যে পুতুলের দিকে চাই, চক্ষু যেন আর নাড়িতে ইচ্ছা করে না। শুনিলাম, পুতুলগুলি কাঁচা মাটীর। কাঁচা মাটীর উপর তেমন সুন্দর রং আর কখনও দেখি নাই। নফরের কাজ দেখিয়া তাহার সুখ্যাতি না করিয়া থাকিতে পারিলাম না। বলিলাম, “এই সকল পুতুল কি তুমি নিজে গড়িয়াছ?”

 নফর হাসিতে হাসিতে উত্তর করিল, “আজ্ঞা না—ইহার কোন পুতুলই আমার হাতে গড়া নয়। আমি এইগুলির ছাঁচ প্রস্তত করিয়াছি। আমার কারিগরেরা সেই ছাঁচের সাহায্যে পুতুল গড়িয়া থাকে।”

 আমি বলিলাম, “পুতুলগুলি অতি সুন্দর। কৃষ্ণনগরের কারিগর ভিন্ন এরূপ মাটীর পুতুল আর কেহই গড়িতে পারে না। এমন চমৎকার রং ফলান আর কখনও দেখি নাই।”

 আরও কিছুক্ষণ সেই ঘরে থাকিয়া আমরা বাহিরের ঘরে