পাতা:চূর্ণ প্রতিমা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চূর্ণ প্রতিমা।
৫৭

গুঁড়ানই জহরলালের উদ্দেশ্য। সেই উদ্দেশেই সে সুধীন্দ্র ও হরিশবাবুর বাড়ীতে প্রবেশ করিয়াছে। যখন জহরলালের উদ্দেশ্য স্থির রহিয়াছে, তখন সে পাগল কোথায়? জহরলাল নিশ্চয়ই পাগল নয়। তবে বোধ হয়, কোন ভয়ানক দুশ্চিন্তায় তাহাকে পাগলের মত করিয়া ফেলিয়াছে। নতুবা পাগলের উদ্দেশ্য ঠিক থাকে না। তাহাদের মনে যখন যাহা উদয় হয়, তাহাই করিয়া থাকে। পাগলের মনের ঠিক থাকে না। জহরলাল যখন মন ঠিক করিয়া কাজ করিতেছে, তখন সে কোন মতেই পাগল নহে।

 তবে সে কেন এমন পাগলামি করে? এই প্রশ্ন আমার মনোমধ্যে উদয় হইল। ভাবিলাম, জহরলাল অনেক দিন ধরিয়া ঐ রকম প্রতিমা গড়িয়া আসিতেছে। কলিকাতার অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তির বাড়ীতেই জহরলালের প্রস্তুত কালীমূর্ত্তি আছে। জহরলাল সেগুলি ভাঙ্গিবার চেষ্ট করিতেছে না কেন? যদি নিজের হাতের প্রস্তুত পুতুলগুলি ভাঙ্গিয়া ফেলিতে তাহার এতই ইচ্ছা হইয়া থাকে, তাহা হইলে সে অন্যগুলি না ভাঙ্গিয়া নূতন প্রস্তুত পুতুলগুলি ভাঙ্গিতেছে কেন?

 কিছুক্ষণ এইরূপ নানা প্রকার চিন্তা করিয়া আমি হরিশবাবুকে বলিলাম, জহরলাল এখনও অজ্ঞান অবস্থায় পড়িয়া আছে। ইত্যবসরে একবার উহার কাপড়খানি ভাল করিয়া দেখা দরকার। পুলিস আসিতে না আসিতে সে কার্য্য করিলে ভাল হয়।

 হরিশবাবু আশ্চর্য্যান্বিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “কেন বলুন দেখি? আমার বোধ হয়, লোকটা কিছুই লইতে পারে নাই।”

 আ। একবার দেখা দরকার। যদি কোন দামী জিনিষ কোথাও লুকাইয়া রাখিয়া থাকে, সহজেই বাহির করা যাইবে।