পাতা:চূর্ণ প্রতিমা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দারোগার দপ্তর, ১৬৮ সংখ্যা।

ছিলাম। পথে একটা কুমারের দোকানে কয়েকজন কারিগর বসিয়া মাটীর পুতুল গড়িতেছিল। আমার জ্যেষ্ঠ কন্যা সুহাসিনীর ইচ্ছা, দোকানের ভিতর গিয়া পুতুলগুলি দেখিয়া আইসে; এবং এই অভিপ্রায়ে সে আমকে বারম্বার অনুরোধ করিতে লাগিল। দুই একবার তাহার কথায় অস্বীকৃত হইলেও অপরাপর পুত্ত্র কন্যাগণের ইচ্ছায় আমি গাড়ী থামাইতে বলিলাম এবং সকলে মিলিয়া দোকানের ভিতর প্রবেশ করিলাম। দোকানদারও আমাদের সঙ্গে সঙ্গে ভিতরে গেল। দোকানের ভিতর গিয়া দেখিলাম, পাঁচজন কারিগর নানা রকমের পুতুল গড়িতেছে। তাহাদের মধ্যে দুইজনকে ভাল কারিগর বলিয়া বোধ হইল। উভয়ের মধ্যে একজন কতক গুলি শিবমূর্ত্তি, অপর ব্যক্তি কতকগুলি শ্যামামূর্ত্তির গঠন করিতেছিল। সুহাসিনীর পুতুল গড়িবার বড় সখ্। সে দোকানের ভিতর গিয়া একবার এদিক একবার ওদিক করিয়া বেড়াইতে লাগিল। তাহার সঙ্গে অন্যান্য বালক-বালিকাগণও অত্যন্ত আহ্লাদিত হইল। কিছুক্ষণ এইরূপ দেখিবার পর সুহাসিনীর গলার দিকে আমার নজর পড়িল। দেখিলাম, তাহার গলার জড়োয়া কণ্ঠির ধুক্‌ধুকিকখানি নাই। ধুক্‌ধুকিখানি অত্যন্ত দামী। উহাতে একখানা বড় হীরা বসান ছিল। সে রকম হীরা আজ-কাল পাওয়া দায়। আর যদিও পাওয়া যায়, তাহা হইলে তাহার দাম এখন দশ হাজার টাকার কম নহে। আমি আশ্চর্য্যান্বিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, “তোর কণ্ঠির ধুকধুকিখানা কোথায় সুহাস?”

 “সে কি!” বলিয়া সুহাসিনী তাহার গলায় হাত দিল। দেখিল, সত্য সত্যই ধুক্‌ধুকিখানি নাই। তাহার হাসি হাসিমুখ