পাতা:চূর্ণ প্রতিমা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চূর্ণ প্রতিমা।

তখনই মলিন হইয়া গেল। সে আর কোন কথা কহিতে পারিল না।

 আমি মনে করিয়াছিলাম, সুহাসিনী হয়ত উহা বাড়ীতে রাখিয়া আসিয়াছে। কিন্তু বাস্তবিক তাহা নহে বুঝিতে পারিয়া, আমারও অত্যন্ত ভাবনা হইল। ধুকধুকিখানিতে আধ ভরির অধিক সোনা ছিল না। কিন্তু সেই হীরাখানির দাম পাঁচ হাজার টাকার কম নহে। আমি তখন সুহাসিনীর দিকে চাহিয়া অতি কর্কশভাবে জিজ্ঞাসা করিলাম, “চুপ করিয়া রহিলি যে? কোন্‌ খানে লাফাইতেছিলি? কোথায় হেঁট হইয়াছিলি মনে কর। ও রকম হীরা আজকাল পাওয়া দায়।”

 আমায় রাগান্বিত দেখিয়া সুহাসিনী আরও ভীত হইল। ইচ্ছা থাকিলেও সে কোন কথা বলিতে পারিল না। সুহাস আমার বড় আদুরে মেয়ে। আমি তাহাকে আর কখনও তিরস্কার করি নাই। আমার ধমকে সে কাঁদিয়া ফেলিল; কিন্তু তাহার ক্রন্দনে কোনরূপ শব্দ হইল না—সে নীরবে অধোমুখে অশ্রু বিসর্জ্জন করিতে লাগিল। আমি তখন তাহাকে আর কোন কথা না বলিয়া দোকান-ঘরটী পাঁতি পাঁতি করিয়া অন্বেষণ করিলাম। দোকানদার স্বয়ং আমার কার্য্যে যথেই সাহায্য করিল। কারিগরগণও সকলে চারিদিক দেখিতে লাগিল। অতি অল্পক্ষণের মধ্যেই ঘরটী তোলপাড় করা গেল। কিন্তু বাহিরের কোন লোককে ভিতরে আসিতে দেওয়া হইল না।

 এইরূপে প্রায় আধঘণ্টা অন্বেষণের পর আমি ধুক্‌ধুকিখানি দেখিতে পাইলাম। দেখিলাম একটা চৌকির পায়ার কাছে উহা পড়িয়া রহিয়াছে। আমি শশব্যস্তে উহাকে তুলিয়া লইলাম।