পাতা:চূর্ণ প্রতিমা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দারোগার দপ্তর, ১৬৮ সংখ্যা।

মনে করিয়ছিলাম, আমাদের পরিশ্রম সফল হইল। কিন্তু না, তাহা হইল না! জগদীশ্বরের সেরূপ ইচ্ছা নহে। ধুকধুকিখানি পাইলাম বটে, কিন্ত উহার মধ্যস্থ হীরাখানি দেখিতে পাইলাম না। তখন আবার সকলে মিলিয়া ভাল করিয়া চারিদিক দেখিতে লাগিলাম, কিন্ত কিছুতেই হীরাখানিকে বাহির করিতে পারিলাম না।

 ক্রমে সন্ধ্যা হইল। ঘরে ঘরে আলোক জ্বলিল, দোকানদার ঘর হইতে বাহিরে যাইবার উদ্যোগ করিল। আমি তাহাকে বাধা দিয়া বলিলাম, “কোথায় যাইতেছ বাপু?”

 দোকানদার সসম্ভ্রমে উত্তর করিল, “ঘরের আলো আনিতে যাইতেছি। সন্ধা উত্তীর্ণ হইয়া গিয়াছে, সকল ঘরে আলো জ্বালা হইয়াছে, কেবল আমার দোকানে এখনও ধূনা গঙ্গাজল দেওয়া হইল না।”

 আ। আমি তাহার বন্দোবস্ত করিতেছি। এখন এঘর হইতে কাহাকেও বাহির হইতে দিব না। যখন আমার পাঁচ হাজার টাকার জিনিষ হারাইয়াছে, তখন আমি সহজে ছাড়িব না, এখনই পুলিসে খবর দিব। পুলিস আসিয়া যাহা ইচ্ছা করুক।

 দো। স্বচ্ছন্দে—আমি তাহাতে কিছুমাত্র ভীত নহি। আর যখন এই ঘরের মধ্যেই আপনার দামী হীরাখানি হারাইয়া গিয়াছে, তখন আপনিই বা সহজে ছাড়িবেন কেন? কিন্তু হয় আগে আমার দোকানে আলোকের বন্দোবস্ত করুন, না হয় পাঁচ মিনিটের জন্য আমায় ছাড়িয়া দিন, আমিই আলোক আনি।

 আ। বাপু! আমি এখন কাহাকেও এ ঘর হইতে ছাড়িতে পারিব না। তুমি কিছুক্ষণ অপেক্ষা কর, আমি তোমার দোকানে আলোক দিতেছি।