পাতা:চেনা দায় - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চেনা দায়।
৪১

আসিয়া উপনীত হইলাম। যাইবার সময় বছিরুদ্দিন গহনাখানি আমাকে প্রদান করিয়া গেল। রাত্রিকালে উহা আমার নিকটেই রহিয়া গেল।

 “পরদিবস প্রাতঃকালে বছিরুদ্দিন আসিয়া আমার বাড়ীতে উপস্থিত হইল ও কহিল, “আপনার পরিচিত যদি কোন পোদ্দার থাকে, তাহাকে এই স্থানে ডাকাইয়া গহনাখানি যাচাইয়া দেখিলে ভাল হয়।”

 “আমার বাড়ীর অতি সন্নিকটেই একজন স্বর্ণকারের একটী দোকান ছিল। তাহাকে ডাকিয়া আমি আমার বাড়ীতে আনিলাম, এবং বছিরুদ্দিনকে লক্ষ্য করিয়া কহিলাম, “এই ব্যক্তি আমার নিকট একখানি অলঙ্কার বিক্রয় করিতে চাহেন, কি মুল্যে আমি উহা গ্রহণ করিতে পারি, তাহা যদি তুমি বলিয়া দিতে পার, তাহা হইলে আমি সবিশেষরূপে উপকৃত হই।”

 উত্তরে স্বর্ণকার কহিল, “সে আর আশ্চর্য্য কি! আপনারা গহনাখনি লইয়া আমার দোকানে আসুন, সেই স্থানে বসিয়া উত্তমরূপে যাচাই করিয়া, আধঘণ্টার মধ্যে মূল্য অবধারিত করিয়া দিব।”

 আমরা উভয়েই তাহার প্রস্তাবে সম্মত হইয়া তাহার সহিত তাহার সেই দোকানে সেই অলঙ্কারের সহিত গমন করিলাম। দোকানদার আমাদিগকে তাহার দোকানে বসাইয়া আমাদিগের সম্মুখে সেই গহনাখানি ওজন করিয়া, কসিয়া দেখিয়া, এবং পরিশেষে তাহার এক অংশ পোড়াইয়া পর্য্যন্ত দেখিয়া, যে দাম বলিয়া দিল, তাহাতে দেখিলাম, তালিকার লিখিত দাম অপেক্ষাও উহার দাম অধিক।