এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হয়তো গােরু বেচতে হবে মেয়ের বিয়ের দায়ে,
মাসে দুবার ম্যালেরিয়া কাঁপন লাগায় গায়ে,
ডাগর ছেলে চাকরি করতে গঙ্গাপারের দেশে
হয়তাে হঠাৎ মারা গেছে ঐ বছরের শেষে—
শুকনাে করুণ চক্ষু দুটো তুলে উপর-পানে
কার খেলা এই দুঃখসুখের, কী ভাবলে সেই জানে।
বিচ্ছেদ নেই খাটুনিতে, শোকের পায় না ফাঁক—
ভাবতে পারে স্পষ্ট ক’রে নেইকো এমন বাক্।
জমিদারের কাছারিতে নালিশ করতে এসে
কী বলবে যে কেমন ক’রে পায় না ভেবে শেষে।
খাটুলিতে এসে বসে যখনি পায় ছুটি,
ভাব্নাগুলাে ধোঁওয়ায় মেলায়, ধোঁওয়ায় ওঠে ফুটি।
ওর যে আছে খোলা আকাশ, ওর যে মাথার কাছে
শিষ দিয়ে যায় বুলবুলিরা আলােছায়ার নাচে,
নদীর ধারে মেঠো পথে টাট্টু চলে ছুটে,
চক্ষু ভােলায় ক্ষেতের ফসল রঙের হরির-লুটে—
জন্মমরণ ব্যেপে আছে এরা প্রাণের ধন
অতি সহজ বলেই তাহা জানে না ওর মন।
জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৪
আলমােড়া
১৭