পাতা:ছড়ার ছবি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ভাটিণ্ডাতে দাঁড় করিয়ে জোরালাে দূরবীনে
দখিনমুখে ভালাে করে দেখে নিলেন চিনে
বিন্ধ্যাচলের পর্বত।
সেইখানেতে খাইয়ে দিল কাঁচা আমের শর্বৎ।
সেখান থেকে এক পহরে গেলেন জৌনপুরে
পড়ন্ত রােদ্‌দুরে।


এইখানেতেই শেষে
যােগীনদাদা থেমে গেলেন যৌবরাজ্যে এসে।
হেসে বললেন, ‘কী আর বলব দাদা,
মাঝের থেকে মটর-ভাজা খাওয়ায় পড়ল বাধা।’
‘ও হবে না’ ‘ও হবে না’ বিষম কলরবে
ছেলেরা সব চেঁচিয়ে উঠল, ‘শেষ করতেই হবে।’
যােগীনদা কয়, ‘যাক গে,
বেঁচে আছি শেষ হয় নি ভাগ্যে।
তিনটে দিন না যেতে যেতেই হলেম গলদ্‌ঘর্ম।
রাজপুত্র হওয়া কি, ভাই, যে-সে লােকের কর্ম?
মােটা মােটা পরােটা আর তিন-পােয়াটাক ঘি
বাংলাদেশের-হাওয়ায়-মানুষ সইতে পারে কি?
নাগরা জুতায় পা ছিঁড়ে যায়, পাগড়ি মুটের বােঝা-
এগুলি কি সহ্য করা সােজা?
তা ছাড়া এই রাজপুত্রের হিন্দি শুনে কেহ
হিন্দি বলেই করলে না সন্দেহ।
যেদিন দূরে শহরেতে চলছিল রামলীলা
পাহারাটা ছিল সেদিন ঢিলা।

২৫