পাতা:ছড়ার ছবি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কুকুরটা তার সঙ্গে থাকত, নাম ছিল তার বটু—
গিরগিটি আর কাঠবেড়ালি তাড়িয়ে ফেরায় পটু।
শালিখ পাখির মহলেতে মাধাের ছিল যশ,
ছাতুর গুলি ছড়িয়ে দিয়ে করত তাদের বশ।
বেগার দেওয়ার কাজে পাড়ায় ছিল না তার মতো,
বাপের শিক্ষানবিশিতেই কুঁড়েমি তার যত।


কিষনলালের ছেলে, তারে দুলাল ব’লে ডাকে—
পাড়াসুদ্ধ ভয় করে এই বাঁদর ছেলেটাকে।
বড়োলােকের ছেলে ব’লে গুমর ছিল মনে,
অত্যাচারে তারই প্রমাণ দিত সকল খনে।
বটুর হবে সাঁতারখেলা, বটু চলছে ঘাটে,
এসেছে যেই দুলালচাঁদের গােলা খেলার মাঠে
অকারণে চাবুক নিয়ে দুলাল এল তেড়ে;
মাধাে বললে, ‘মারলে কুকুর ফেলব তােমায় পেড়ে।’
উঁচিয়ে চাবুক দুলাল এল, মানল নাকো মানা,
চাবুক কেড়ে নিয়ে মাধো করলে দু-তিন-খানা।
দাঁড়িয়ে রইল মাধো, রাগে কাঁপছে থরােথরাে—
বললে, ‘দেখব সাধ্য তােমার, কী করবে তা করাে।’
দুলাল ছিল বিষম ভীতু, বেগ শুধু তার পায়ে—
নামের জোরেই জোর ছিল তার, জোর ছিল না গায়ে।


দশ-বিশ-জন লােক লাগিয়ে বাপ আনলে ধরে,
মাথােকে এক খাটের খুরােয় বাঁধল কষে জোরে।
বললে, ‘জানিস নেকো, বেটা, কাহার অন্ন ধারিস!
এত বড়াে বুকের পাটা, মনিবকে তুই মারিস!

৬০