পাতা:ছড়ার ছবি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বুঝিবা ওর মেঝেমেয়ে পাতা ছয়েক ব’কে
মাথার দিব্যি দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল ওকে।
উমারানীর বিষম স্নেহের শাসন,
জানিয়েছিল চতুর্থীতে খােকার অন্নপ্রাশন—
জিদ ধরেছে, হােক-না যেমন ক’রেই
আসতে হবে শুক্রবার কি শনিবারের ভােরেই।
আবেদনের পত্র একটি লিখে
পাঠিয়েছিল বুড়াে তাদের কর্তাবাবুটিকে।
বাবু বললে, ‘হয় কখনাে তা কি,
মাস-কাবারের ঝুড়িঝুড়ি হিসাব লেখা বাকি,
সাহেব শুনলে আগুন হবে চ’টে,
ছুটি নেবার সময় এ নয় মােটে।’
মেয়ের দুঃখ ভেবে
বুড়াে বারেক ভেবেছিল কাজে জবাব দেবে।
সুবুদ্ধি তার কইল কানে রাগ গেল যেই থামি,
আসন্ন পেনসনের আশা ছাড়াটা পাগলামি।
নিজেকে সে বললে, “ওরে, এবার না হয় কিনিস
ছােটোছেলের মনের মতাে একটা-কোনাে জিনিস।
যেটার কথাই ভেবে দেখে দামের কথায় শেষে
বাধায় ঠেকে এসে।
শেষকালে ওর পড়ল মনে জাপানি ঝুম্ঝুমি,
দেখলে খুশি হয়তাে হবে উমি।
কেইবা জানবে দামটা যে তার কত,
বাইরে থেকে ঠিক দেখাবে খাঁটি রুপাের মতাে।
এমনি করে সংশয়ে তার কেবলই মন ঠেলে,
হাঁ-না নিয়ে ভাব্নাস্রোতে জোয়ার-ভাঁটা খেলে।

৭৪