বালুর চরে আলুহাটা, হাতে বেতের চুপড়ি,
খেতের মধ্যে ঢুকে কালু মুলাে নিল উপড়ি।
নদীর পারে কিচির-মিচির লাগালাে গাঙ্শালিখ যে,
অকারণে ঢােলক বাজায় মুলাে-খেতের মালিক যে।
কাঁকুড়-খেতে মাচা বাঁধে পিলেওয়ালা ছােকরা,
বাঁশের বনে কঞ্চি কাটে মুচিপাড়ার লােকরা।
পাটনীতে নীল-কুঠির গঞ্জে খেয়া চালায় পাটনি,
রােদে জলে নিতুই চলে চার-পহরের খাটনি।
কড়া-পড়া কঠিন হাতে মাজা কাসার কাঁকনটা,
কপালে তার পত্রলেখা উল্কি-দেওয়া আঁকনটা।
কুচোমাছের টুকরি থেকে চিলেতে নেয় ছোঁ মেরে—
মেছনি তার সাতগুষ্টি উদ্দেশে দেয় যমেরে
ও পারেতে খড়্গপুরে কাঠি পড়ে বাজনায়,
মুন্শিবাবু হিসেব ভােলে জমিদারের খাজনায়।
রেডিয়ােতে খবর জানায়, বােমায় করলে ফুটো—
সমুদ্দুরে তলিয়ে গেল মালের জাহাজ দুটো।
খাঁচার মধ্যে ময়না থাকে—বিষম কলরবে
ছাতু ছড়ায়, মাতায় পাড়া আত্মারামের স্তবে।
হুইস্ল্ দিল প্যাসেঞ্জারে সাঁৎরাগাছির ড্রাইভার—
মাথায় মােছে হাতের কালি, সময় না পায় নাইবার।
পাতা:ছড়া-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৭
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ছড়া
৩৩