পাতা:ছড়া-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপরিচয় নিত্যপরিবর্তনশীলতা মেঘের মতো, স্বপ্নের সদৃশ। এ-সবই নূতন করিয়া স্পষ্ট হয় আলোচ্য রচনায় ও রচনার প্রক্রিয়ায়। পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালােচনার প্রয়ােজন এখানে নাই, বিশেষ দৃষ্টান্ত হিসাবে কেবল একটি ছড়ার পাণ্ডুলিপি-ধৃত পূর্বরূপ উদ্ধার করা চলে

চলচ্চিত্র

মাথার থেকে ধানী রঙের ওড়নাখানা সরে যায়,
চীনের টবে হাসনুহানার গন্ধে বাতাস ভরে যায়।
তিনটে পাঠান মালী আছে নবাবজাদার বাগানে,
দুয়ারে তার ডালকুত্তো চীৎকারে-রাত-জাগানে।
ধানশ্রীতে সানাই বাজে কুঞ্জবাবুর ফটকে,
দেউড়িতে ভিড় জমে গেছে নাটক দেখার চটকে।
কোমর-ঘেরা আঁচলখানা, হাতে পানের কৌটা,
ঘােষপাড়াতে হহনিয়ে চলে নাপিত-বউটা।
গাছে চড়ে রাখাল ছোড়া জোগায় কাঁচা সুপুরি,
দুবেলা পান বাঁধা আছে, আরো আছে উপুরি।
সের পঁচিশেক কদমা ছিল কলুবুড়ির ধামতে,
জলের মধ্যে উলটে গেল ঘাটের ধারে নামাতে।
মাছ এল তাই কাৎলাপাড়া খয়রাহাটি ঝেটিয়ে,
মােটা মােটা চিংড়ি ওঠে পাঁকের তলা ঘেটিয়ে।
চিনির পান খেয়ে খুশি, ডিগবাজি খায় কাৎলা-
দা মাছের চ্যাপটা জঠর রইল না আর পালা।
শেষে দেখি ইলিশ মাছের মিষ্টিতে আর রুচি নাই,
চিতল মাছের মুখটা দেখেই প্রশ্ন তারে পুছি নাই।

১ ছেলেভুলানাে ছড়া' ১৩০১ আশ্বিন-কার্তিকের সাধনায় মেয়েলি ছড়া’ নামে মুন্ত্রিত ও

পরে শােকসাহিত্য গ্রন্থে সংকলিত।

৬১