পাতা:ছড়া-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
ছড়া
ছড়া
গ্রন্থপরিচয়

ননদকে ভাল বললে, তুমি মিথ্যে এ মাছ কোট, ভাই,
বঁধতে গিয়ে দেখি এ যে মিঠাইগার ছোটো ভাই।
রোদের তাপে হাওয়া কাপে, মাঠের বালি তেতে যায়
পাকুড়তলার ঘাটে গোক দিঘিতে জল খেতে যায়।
ডিঙি চলে ধিকি ধিকি, নদীর ধারা মিহি
দুপুর-রোদে আকাশে চিল ডাক দিয়ে যায় চিহি।
লখা চলে ছাতা মাথায় গৌরী কনের বর
ড্যাং ড্যাঙাড্যাং বাদ্যি বাজে; চড়কডাঙায় ঘর।


হাঁটুজলে পার হয়ে যায় মরা নদীর সেঁতা,
পাড়ির কাছে পাকে ডিঙি আধখানা রয় পোতা।
এনামেলের-বাসন-ভরা চলেছে এক ঝাঁকা,
কামার পিটোয় দুদুমিয়ে গোরুর গাড়ির চাকা।
মাঠের পারে ধকিয়ে চতি গাড়ির ধোওয়া,
আকাশ বেয়ে হেঁটে চলে কালো বাঘের রেওয়া।
কাসারিটা বাজিয়ে কাঁসা জাগায় গলিটাকে,
কুকুরগুলোর অসহ হয়- আর্তনাদে ডাকে।
ভিজে চুলের ঝুটি বেঁধে বসে আছেন কন্যে,
মোচার ঘন্ট বানাতে চান কোন্ মানুষের জন্যে।
গামলা চেটে পরখ করে গাইটা দড়ি-বা,
উঠোনের এক কোণে জমা কয়লাগুড়ের গাদা।
ভালুকদাচের ডুগডুগি ওই বাজছে ও পাড়াতে,
কো-দিশী ওই বেদের মেয়ে নাচায় লাঠি হাতে।
অশথতলায় পাটল গোরু আরামে চোখ বোতে,
ছাগলছানা ঘুরে বেড়ায় কচি বাসের খোঁজে।
হঠাৎ কখন বাদুলে মেঘ ছুটল দলে দলে,
পশলা কয়েক বৃষ্টি হতেই মাঠ ভাসালো জলে।

৬২