বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ছন্দ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ছন্দের মাত্রা
৯১

চাঁপা, তোমার আঙিনাতে
ফেরে বাতাস কাছে কাছে;
আজি ফাগুনে  একসাথে
দোলা লাগিয়ো  নাচে নাচে।
বধু, তোমার দেহলিতে
বর আসিছে দেখিছ কি।
আজি তাহার বাঁশরিতে
হিয়া মিলায়ে দিয়ো সখি ৷

৬+৩-এর ঠাটেও নয় মাত্রাকে সাজানো চলে। যেমন—

সেতারের তারে | ধানশী
মিড়ে মিড়ে উঠে | বাজিয়া।
গোধূলির রাগে | মানসী
সুরে যেন এল | সাজিয়া।

আরেকটা:

তৃতীয়ার চাঁদ | বাঁকা সে,
আপনারে দেখে | ফাঁকা সে।
তারাদের পানে | তাকিয়ে
কার নাম যায় | ডাকিয়ে
সাথী নাহি পায় | আকাশে।

এতক্ষণ এই যে নয় মাত্রার ছন্দটাকে নিয়ে নয়-ছয় করছিলুম সেটা বাহাদুরি করবার জন্যে নয়, প্রমাণ করবার জন্যে যে এতে বিশেষ বাহাদুরি নেই। ইংরেজি ছন্দে এক্‌সেন্‌টের প্রভাব; সংস্কৃত ছন্দে দীর্ঘহ্রস্বের সুনির্দিষ্ট ভাগ। বাংলায় তা নেই, এইজন্যে লয়ের দাবিরক্ষা ছাড়া বাংলা ছন্দে মাত্রা বাড়িয়ে-কমিয়ে চলার আর কোনো বাধা নেই। ‘জল পড়ে পাতা নড়ে’ থেকে আরম্ভ করে পাঁচ ছয় সাত আট নয় দশ মাত্রা পর্যন্ত বাংলা ছন্দে আমরা দেখি। এই সুযোগে কেউ বলতে পারেন