সরোবর উচ্ছল কূলে কূলে,
তটে তারি বেণুশাখা দুলে দুলে
মেতে ওঠে বর্ষণ-গীতিকার।
শ্রোতারা নিশ্চয় বুঝতে পারছেন আবৃত্তিকালে পদান্তের পূর্বে কোনো যতিই দিইনি, অর্থাৎ বারমাত্রা একটি ঘনিষ্ঠ গুচ্ছের মতোই হয়েছে। এই পদগুলিকে বারমাত্রার পদ বলবার কোনো বাধা আছে বলে আমি কল্পনা করতে পারিনে। উল্লিখিত শ্লোকের ছন্দে বারমাত্রা, প্রত্যেক পদে তিন কলা, প্রত্যেক কলায় চার মাত্রা। বারমাত্রার পদকে চার কলায় বিভক্ত করে ত্রৈমাত্রিক করলে আরেক ছন্দ দেখা দেবে। যথা—
শ্রাবণ-গগন, ঘোর ঘনঘটা,
তাপসী যামিনী এলায়েছে জটা,
দামিনী ঝলকে রহিয়া রহিয়া।
এ ছন্দ বাংলাভাষায় সুপরিচিত।
তমালবনে ঝরিছে বারিধারা,
তড়িৎ ছুটে আঁধারে দিশাহারা।
ছিঁড়িয়া ফেলে কিরণ-কিঙ্কিনী
আত্মঘাতী যেন সে পাগলিনী।
পঞ্চমাত্রাঘটিত এই বারমাত্রাকেও কেন যে বারমাত্রা বলে স্বীকার করব না, আমি বুঝতেই পারিনে।
কেবল নয়মাত্রার পদ বলার দ্বারা ছন্দের একটা সাধারণ পরিচয় দেওয়া হয়, সে পরিচয় বিশেষভাবে সম্পূর্ণ হয় না। আমার সাধারণ পরিচয় আমি ভারতীয়, বিশেষ পরিচয় আমি বাঙালি, আরও বিশেষ পরিচয় আমি বিশেষ পরিবারের বিশেষ নামধারী মানুষ। নয়মাত্রার পদবিশিষ্ট ছন্দ সাধারণভাবে অনেক হতে পারে।