পাতা:ছন্দ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৩৪
ছন্দ

রবীন্দ্রনাথ এ ছন্দকে তিনমাত্রার ছন্দ (পৃ ২৪২), তিনবর্গ মাত্রার ছন্দ, ত্রৈমাত্রিক ছন্দ প্রভৃতি নানা নাম দিয়েছেন। তিন সংখ্যাটা অসম অর্থাৎ বিজোড়। সেজন্য এ ছন্দকে তিনি ‘অসমমাত্রার ছন্দ’ নামেও অভিহিত করেছেন। যে ছন্দের উপপর্ব দুইমাত্রা-পরিমিত তাকে বলেছেন ‘সমমাত্রার ছন্দ,’ আর দুই মাত্রা ও তিন মাত্রার দু-রকম উপপর্ব নিয়ে গঠিত ছন্দকে বলেছেন ‘বিষমমাত্রার ছন্দ’ (পৃ ১৪-১৫, ৩৫-৩৬)।

 বিষমমাত্রার ছন্দের উপপর্বগুলি স্বভাবতই সমান নয়। এজন্য বিষমমাত্রার ছন্দকে এক স্থলে ‘অসমান মাত্রার ছন্দ’ (পৃ ১৩-১৪) এবং অন্যত্র ‘অসমমাত্রার ছন্দ’ (পৃ ১৪, ১৪১) নামও দেওয়া হয়েছে। ‘অসমান মাত্রাভাগের ছন্দ’ (পৃ ১৩৩) বলতে কিন্তু সম্পূর্ণ অন্য বিষয় বোঝাচ্ছে। এখানে মাত্রাভাগ মানে যতিবিভাগ বা পর্ব (পৃ ১৩৫ পাদটীকা ১)।

 ষন্মাত্রপর্বিক ছন্দের উপপর্বে সাধারণত তিন মাত্রা থাকে বলেই তাকে বলা হয়েছে অসমমাত্রার ছন্দ। কিন্তু মনে রাখা প্রয়োজন যে, এ ছন্দের পর্বে অনেক সময় তিনটি করে দুইমাত্রার উপপর্বও থাকে (পৃ ১০০-১০১, ২৩৯)।

 আর্যা.(পৃ ১৫৩)—সংস্কৃত মাত্রাবৃত্ত বিভাগের অন্তর্গত একটি ছন্দোবর্গের নাম আর্যা। আর্যার রূপভেদ অনেক। তার মধ্যে যে রূপটি সব চেয়ে বেশি পরিচিত তার নাম পথ্যার্যা। তাই আর্যা ছন্দ বলতে সাধারণত এই পথ্যার্যা ছন্দকেই বোঝায়। আর্যাবর্গের প্রধান নিয়মগুলি হচ্ছে এই।—

 ১। প্রতি গণে বা পর্বে চার কলামাত্রা থাকা চাই। আর্যা হচ্ছে মূলত একটি চতুর্মাত্রপর্বিক ছন্দোবর্গের নাম।

 ২। প্রথমার্ধে সাড়ে সাত পর্ব, ত্রিশ মাত্রা।

 ৩। দ্বিতীয়ার্ধেও সাড়ে সাত পর্বই গণনা করা হয়। কিন্তু এই