পাতা:ছন্দ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
২৮
ছন্দ
২৮

২৮ ছন্দ

আকার ইঙ্গিত স্থুর এবং রূপক। পুরুষমান্ষের যে-পরিচয়ে তিনি আপিসের বড়ো বাবু সেটা আপিসের খাতাপত্র দেখলেই জানা যাস, কিন্তু মেয়ের যে-পরিচয়ে তিনি গৃহলক্্ী সেটা প্রকাশের জন্তে তার দিথেয় পিঁছুর, তার হাতে কন্কণ। অর্থাৎ এটার মধ্যে রূপক চাই, অলংকার চাই,. কেননা কেবলমাত্র তথ্যের চেয়ে এ যে বেশি, এর পরিচয় শুধু জ্ঞানে নয়, হদয়ে। এ ষে গৃহলক্ীকে লক্ষ্মী বলা গেল এইটেই তো হল একটা, কথার ইশারামাত্র ; অথচ আপিসের বড়ো বাবুকে তো৷ আমাদের কেরানি নারায়ণ বলবার ইচ্ছাও হয় না, যদিও ধর্মতত্বে বলে থাকে সকল নরের, মধ্যেই নারায়ণের আবির্ভাব আছে । তাহলেই বোঝা যাচ্ছে আপিসের, বড়ো বাবুর মধ্যে অনির্বচনীয়তা নেই ; কিন্তু যেখানে তার গৃহিণী সাধ্বী সেখানে তার মধ্যে আছে। তাই বলে এমন কথা বলা যায় না যে, এঁ বাবুটিকেই আমরা সম্পূর্ণ বুঝি আর মা-লক্ীকে বুবিনে, বরঞ্চ

উলটো! । কেবল কথা এই যে, বোববার বেলায় মা-লক্ষমী যত সহজ

বোঝাবার বেলায় তত নয়।

“কেবা শুনাইল শ্তাম নাম।* ব্যাপারটা ঘটনা হিসাবে সহজ। কোনো এক ব্যক্তি দ্বিতীয় ব্যক্তির কাছে তৃতীয় ব্যক্তির নাম উচ্চারণ করেছে। এমন কাণ্ড দিনের মধ্যে পঞ্চাশবার ঘটে । এইটুকু বলবার জন্তে কথাকে বেশি নাড়া দেবার দরকার হয় না। কিন্তু নাম কানের ভিতর দিয়ে যখন মরমে গিয়ে পশে, অর্থাৎ এমন জায়গায় কাজ করতে থাকে যে-জায়গা দেখা শোনার অতীত, এবং এমন কাজ করতে থাকে যাকে মাপা যায় না, ওজন করা যায় না, চোখের সামনে দাড় করিয়ে যার সাক্ষ্য নেওয়া যায় না, তখন কথাগুলোকে নাড়া দিয়ে তাদের পুরো) অর্থের চেয়ে তাদ্দের কাছ থেকে আরো অনেক বেশি আদায় করে নিতে হয়। অর্থাৎ আবেগকে প্রকাশ করতে গেলে কথার মধ্যে সেই আবেগের ধর্ম সঞ্চার করতে হয় । আবেগের ধর্ম হচ্ছে বেগ। কথা