পাতা:ছায়াদর্শন - কালীপ্রসন্ন বিদ্যাসাগর.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ܟ চিরপুরাতন বস্তু। কিন্তু, বিদ্যুতের বিবিধ তত্ত্বের সহিত মনুয্যের বৈজ্ঞানিক পরিচয় যেমন অল্প দিনের কথা, পারলৌকিক তত্ত্বের বৈজ্ঞানিক ইতিবৃত্তও সেইরূপ অল্প কালের কথা। যে কালে পৃথিবীর সৃষ্টি, সেই কালেই বিদ্যুতের সৃষ্টি, এবং যে কালে ইহলোকের সৃষ্টি, সেই কাল হইতেই পরলোক বিদ্যমান রহিয়াছে। অপিচ, পৃথিবীর যে সকল অসভ্য জাতি বিদ্যুতের কোন তত্ত্ব জানে না, তাহারা যেমন বিদ্যুতের স্পর্শ হইতে দেহ প্ৰাণ রক্ষার জন্য নানারূপ উপায় অবলম্বন করে, সেইরূপ আবার যে সকল অসভ্য জাতি পারলৌকিক তত্ত্বের প্রকৃত মৰ্ম্ম অবগত নহে, তাহারাও, প্রাণের কেমন এক ক্ষুরণে, পারলৌকিক সত্যে কতকটা বিশ্বাস করিতে বাধ্য হইয়া, লোকান্তরিত পিতামাতা এবং ভ্রাতা ও বন্ধুজনের পূজা করিয়া থাকে। ইহা বলা অতিরিক্ত যে, সুসভ্য ও সমুন্নত জাতির মধ্যে পারলৌকিক তত্ত্বে বিশ্বাস অধিকতর পরিস্ফুট এবং ধৰ্ম্মজীবনের সহিত সম্পৃক্ত। এই সংক্ষিপ্ত ইতিবৃত্তের প্রথমেই কহিয়াছি যে, ভারতবর্ষের পুরাতন হিন্দু, বহুকাল হইতেই, এই তত্ত্বে প্ৰগাঢ় বিশ্বাসী। যাহারা এই হিন্দু জাতির কিছু মাত্র অবগত আছেন, তাহারা জানেন যে, হিন্দুর বেদ, উপনিষদ ও পুরাণ এই তত্ত্বের কথায় পরিপূর্ণ। হিন্দু স্বৰ্গগত পিতৃপুরুষের পূজা না করিয়া নবজাত শিশুর মুখে অন্ন দেয় না, এবং পিতৃপুরুষকে অগ্রভাগ উপহার না দিয়া ক্ষেত্রের নূতন শস্য লইয়া নবান্ন উৎসব সম্পন্ন