পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/১০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চলে যায়— কিন্তু মেয়েদের যেন জলের সঙ্গে বেশি ভাব— পরস্পরের যেন একটা সাদৃশ্য এবং সখিত্ব আছে। জল এবং মেয়ে উভয়েই বেশ সহজে ছল ছল জল জল করতে থাকে— একটা বেশ সহজ গতি ছন্দ তরঙ্গ, দুঃখতাপে অল্পে অল্পে শুকিয়ে যেতে পারে, কিন্তু আঘাতে একেবারে জন্মের মতো তুখানা হয়ে ভেঙে যায় না। সমস্ত কঠিন পৃথিবীকে সে বাহুবন্ধনে আলিঙ্গন করে আছে, পৃথিবী তার অন্তরের গভীর রহস্য বুঝতে পারে না। সে নিজে শস্য উৎপাদন করে না, কিন্তু ভিতরে ভিতরে সে না থাকলে পৃথিবীতে একটি ঘাসও গজাতে পারত না। মেয়েকে পুরুষের সঙ্গে তুলনা ক’রে টেনিসন বলেছেন : Water unto wine ! আমার আজকের মনে হচ্ছে জল unto স্থল। তাই জন্তে মেয়েতে ও জলেতে বেশ মিশ খায়। অন্য অনেকরকম ভারবহন মেয়েকে শোভা পায় না ; কিন্তু উৎস থেকে, কুয়ো থেকে, ঘাট থেকে, জল তুলে নিয়ে যাওয়া কোনো কালেই মেয়েদের পক্ষে অসংগত মনে হয় না । গা ধোওয়া, স্নান করা, পুকুরের ঘাটে এক-কোমর জলে বসে পরস্পর গল্প করা, এ-সমস্ত মেয়েদের পক্ষে কেমন শোভন । আমি দেখেছি, মেয়েরা জল ভালোবাসে, কেননা উভয়ে স্বজাত । অবিশ্রাম সহজপ্রবাহ এবং কলধ্বনি, জল এবং মেয়ে ছাড়া আর-কারও নেই। ইচ্ছে করলে আরও অনেক সাদৃশ্ব দেখানো যেতে পারত, কিন্তু বেলাও বোধ করি অনেক হয়েছে এবং একটা কথাকে নিয়ে বেশি নেংড়ানো কিছু নয়। So (t