পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ぐり বোলপুর শুক্রবার। ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৮৯২ রসিকতা জিনিসটা বড়ো বিপদের জিনিস। ও যদি প্রসন্ন সহাস্য-মুখে আপনি ধরা দিলে তো অতি উত্তম, আর ওকে নিয়ে যদি টানাটানি করা যায় তবে বড়োই ‘ব্যাভ্রম’ হবার সম্ভাবনা । হাস্যরস প্রাচীনকালের ব্রহ্মাস্ত্রের মতো ; যে ওর প্রয়োগ জানে সে ওকে নিয়ে একেবারে কুরুক্ষেত্র বাধিয়ে দিতে পারে, আর যে হতভাগ্য ছুড়তে জানে না অথচ নাড়তে যায়, তার বেলায় বিমুখ ব্ৰহ্মাস্ত্র আসি অস্ত্রীকেই বধে’— হাস্যরস তাকেই হাস্যজনক ক’রে তোলে । মেয়ের রসিকতা করতে গিয়ে যদি মুখরা হয়ে পড়ে তবে সেটা ভারি অশোভন দেখতে হয়। আমার তো মনে হয় ‘কমিক হতে চেষ্টা ক’রে সফল হলেও মেয়েদের সাজে না, নিস্ফল হলেও মেয়েদের সাজে না। কারণ ‘কমিক জিনিসটা ভারি গাদ এবং প্রকাগু। ‘সাব্লিমিটি’র সঙ্গে ‘কমিক্যালিটি'র একটা আত্মীয়তার সম্পর্ক আছে ; সেইজন্যে হাতি কমিক, উট কমিক, জিরাফ কমিক, স্থূলতা কমিক। সৌন্দর্যের সঙ্গে বরঞ্চ প্রখরতা শোভা পায়, যেমন ফুলের সঙ্গে কাটা । তেমনি শাণিত কথা মেয়েদের মুখে বডড বাজে বটে, তেমনি সাজেও বটে। কিন্তু যে-সকল বিক্রপে কোনোরকম স্থলত্বের আভাসমাত্র দেয়, তার দিক দিয়েও মেয়েদের যাওয়া উচিত হয় না ; সে হচ্ছে আমাদের সারাইম স্বজাতীয়ের জন্যে। পুরুষ ফলস্টাফ আমাদের হাসিয়ে নাড়ী ছিড়ে দিতে পারে, কিন্তু মেয়ে ফলস্টাফ আমাদের গা জালিয়ে দিত।